মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রকৃত ফলাফল ঘোষণার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন। আজ শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে
মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রকৃত ফলাফল ঘোষণার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন। আজ শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে

প্রভাব খাটিয়ে মহীউদ্দীনকে বিজয়ী ঘোষণার অভিযোগ, ফলাফল বাতিলের দাবি

মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রভাব ও ভোট কারচুপির মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। এমন অভিযোগ এনে ফলাফল বাতিলের দাবি জানিয়ে আজ শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অপর প্রার্থী কে এম বজলুল হক খান ওরফে রিপন।

সংবাদ সম্মেলনে বজলুল হকসহ সাবেক জেল সুপার হেলাল উদ্দিন, স্টেডিয়াম রোড জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ, ঘিওর উপজেলার মৌহালী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা শফিউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বজলুল হক অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি চশমা প্রতীকে এবং আনারস প্রতীকে গোলাম মহীউদ্দীন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জেলার সাতটি উপজেলায় সাতটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়। ক্ষমতার অপব্যবহার, ভোটাদের প্রভাবিত এবং কারচুপির মাধ্যমে ফলাফল পাল্টে দিয়ে তাঁকে পরাজিত করা হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা পরিষদ নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে তিনি মামলা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বজলুল হক খান বলেন, তাঁর প্রতিপক্ষ গোলাম মহীউদ্দীন পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিভিন্ন অপকৌশল প্রয়োগ এবং নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ভোটারদের প্রভাবিত করার জন্য টাকা, চাদরসহ নানা ধরনের উপটৌকন এবং প্রকাশ্যে খাবার বিতরণ করেন। এ ছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতি উপজেলায় তাঁর প্রতিপক্ষের লোকজন ভোটারদের একত্র করে জোর করে ভোট আদায় করেন। শিবালয় উপজেলা কেন্দ্রে এক নারী ভোটারের আঙুলের ছাপ মিল না হওয়া সত্ত্বেও তাঁর ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট গণনার আগেই প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তাঁর অধীনদের গোলাম মহীউদ্দীনের পক্ষে ফলাফল ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করেন। এ ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও ফলাফলের প্রিন্ট কপি এবং জেলা পরিষদ নির্বাচন ট্রাইব্যুনালের ইভিএম বিশেষজ্ঞ দিয়ে যাচাই–বাছাই করা হলে সঠিক ফল বের হয়ে আসবে।

তিনি আরও বলেন, সকাল থেকেই ঘিওর উপজেলা ভোটকেন্দ্রের সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর মহীউদ্দীনের লোকজন ভোটারদের বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোট আদায় করে নেন। বিষয়টি তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সচিবকে লিখিতভাবে অবহিত করেন। এরপর প্রতিপক্ষে ভোটের সংখ্যা তাঁর প্রাপ্ত ভোট বলে ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া দৌলতপুর উপজেলা ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের লোকজন তাঁর এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে জোর করে ভোট আদায় করে নেন এবং বজলুল হকের ভোটারদের বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোট দেওয়া থেকে বিরত রাখা হয়।

লিখিত বক্তব্যে বজলুল হক খান আরও উল্লেখ করেন, সিঙ্গাইর উপজেলা কেন্দ্রে তিনি ১১৭ ভোট এবং প্রতিপক্ষ মাত্র ৩৮ ভোট এবং সাটুরিয়া কেন্দ্রে তিনি ৬০ ভোট এবং প্রতিপক্ষ ৫৮ ভোট পেলে প্রতিপক্ষ অন্যান্য কেন্দ্রে ব্যাপক কারচুপি করে নিজের পক্ষে ফলাফল প্রভাবিত করেন। শত অনিয়মেও তিনি ৪২৫ ভোট এবং প্রতিপক্ষ ৪৫২ ভোট পেয়েছেন বলে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনের সাজানো ফলাফল বাতিল করে সঠিক ফলাফল ঘোষিত হলে তিনি বিজয়ী হবেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন আড়ালে চলে যান।