উত্তরের হিমেল হাওয়া ও তীব্র শীতে কুড়িগ্রামে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে চারদিক। দিনের অধিকাংশ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। রাতের তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে শীতল বাতাসে হাড়কাঁপানো শীতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
আজ রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দূরপাল্লার বাস ও মোটরসাইকেলচালকদের সকাল ৯টায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। এর আগে সকাল ৭টায় কুড়িগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শনিবার তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কুড়িগ্রামের বেলগাছা ইউনিয়নের বাসচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, দিনে ঠান্ডা বেশি থাকলেও কুয়াশা কম পড়ে। কিন্তু বিকেল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘন কুয়াশায় চারদিক ঢেকে যেতে থাকে। শীতের কারণে ১০ হাত সামনের কিছুই দেখা যায় না। রংপুর থেকে কুড়িগ্রাম আসতে এক ঘণ্টার জায়গায় দেড় ঘণ্টা লাগল।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি ও আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা যায়, আজ ঘন কুয়াশায় বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। কুড়িগ্রামে আগামী ২৪ ঘণ্টা সূর্যের দেখা না মেলার সম্ভাবনা আছে। চলতি সপ্তাহ ও মাসজুড়ে হাড়কাঁপানো শীতের সম্ভাবনা আছে। আর এবার শীত অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি হতে পারে।
তীব্র ঠান্ডায় কুড়িগ্রামের নদীপাড় ও চরাঞ্চলের মানুষ, কৃষিশ্রমিক ও স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ বিপাকে পড়েছেন। উলিপুর উপজেলার আইরমারীর চরের নৌকার মাঝি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল প্রায় ১০টা বাজে, তা–ও সূর্যের দেখা পাওয়া যায় না। ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসের কারণে নৌকা নিয়ে নদীতে থাকা কষ্টকর হয়া গেইছে। কিন্তু উপায় নাই, হামার তো নৌকা চালায় খাওয়া নাগবে। তাই সকাল সকাল নৌকা নিয়ে বের হইছি, আল্লাহ ভরসা।’
যাত্রাপুর ইউনিয়নের ঝুনকার চরের বয়স্ক নারী গুতরতি বেওয়া বলেন, ‘হাড়কাঁপানো শীত আর নদীর ঠান্ডা বাতাসে কাবু হয়া গেইছি। দিনে তা–ও এদিক-সেদিক চলাফেরা করা যায়, আগুন জ্বালে থাকা যায়। কিন্তু রাত হলে বুড়া হাড্ডিত শীত কনকন করি লাগে। একনা শীতের কম্বল হইলে উপকার হইল হয়।’
কুড়িগ্রাম আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, এক সপ্তাহ থেকে জেলার গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ মাসে কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।