প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ায় নতুন মন্ত্রী ফরিদুলকে ইসিতে তলব

জামালপুর-২ আসনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ও নতুন মন্ত্রিসভায় পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত ফরিদুল হক খান
ফাইল ছবি

ভোট গ্রহণের দিন জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনের একটি কেন্দ্রে গোপন কক্ষে না গিয়ে প্রকাশ্যে নিজের ব্যালট পেপারে সিল মেরেছিলেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। এ ঘটনায় ব্যাখ্যা চেয়ে তাঁকে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠি তাঁকে পাঠানো হয়েছে। এতে আগামী সোমবার বেলা তিনটায় সশরীর হাজির হয়ে তাঁকে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

ফরিদুল হক খান নতুন মন্ত্রিসভায় পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। আজ সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে তিনি শপথ নিয়েছেন। তবে এখনো তাঁর দপ্তর বণ্টন করা হয়নি।

চিঠিতে বলা হয়, ‘৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন আপনি (ফরিদুল হক খান) ইসলামপুর উপজেলার পলবান্ধা ইউনিয়নের সিরাবাজাদ উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে প্রকাশ্যে ভোট প্রদান করেছেন। যা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছবিসহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশ্যে ভোট প্রদান করে ভোটের গোপনীয়তা রক্ষা না করা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ৮৩ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে শাস্তিযোগ্য নির্বাচনী অপরাধ। এ ধরনের অপরাধ সংঘটনের দায়ে আপনার বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, সে বিষয়ে আগামী সোমবার বেলা তিনটায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যথাসময়ে উপস্থিত হয়ে আপনাকে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।’

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-২ আসনে নৌকার প্রার্থী ছিলেন ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল হক খান। তিনি নৌকা প্রতীকে ৭০ হাজার ৭৬২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শাহীনুজ্জামান কাঁচি প্রতীকে ৩০ হাজার ৫৪৮ ভোট পেয়েছেন। শাহীনুজ্জামান জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

ফরিদুল হক খান এবার জয়লাভের মাধ্যমে টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন। ভোটের দিন তাঁর প্রকাশ্যে সিল দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন ফরিদুল হক খান। এরপর নেতা-কর্মীরা তাঁকে ব্যালট পেপার দেন। তিনি কালো কাপড়ে ঘেরা গোপন কক্ষে না গিয়ে ব্যালট বাক্সের পাশে ব্যালট পেপার রেখে নৌকা প্রতীকে ভোট দেন। এরপর তিনি ব্যালট পেপার ভাঁজ করে ব্যালট বাক্সে ফেলেন।

‘ভোটকক্ষে ব্যালটে প্রকাশ্যে সিল মারলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী’ শিরোনামে গত রোববার প্রথম আলোর অনলাইন ও পরদিন সোমবার পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভোটকক্ষের মধ্যে প্রকাশ্যে ভোট প্রদান করায় নির্বাচন কমিশন ফরিদুল হক খানকে তলব করেছেন। ওই ধরনের একটি চিঠি পেয়েছি।’

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ফরিদুল হক খানকে একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।