সরকার নির্ধারিত বেতনকাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় সুতা ও কাপড় তৈরির একটি কারখানার শ্রমিকেরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এতে মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
আজ মঙ্গলবার সকালে মহাসড়কের নয়াডিঙ্গী এলাকায় কারখানার সামনে মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা।
গোলড়া হাইওয়ে থানার পুলিশ, শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাটুরিয়ার নয়াডিঙ্গী এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে রাইজিং নিট টেক্সটাইলস লিমিটেড নামের ওই কারখানায় সুতা ও কাপড় তৈরি করা হয়। এই কারখানায় প্রায় ২ হাজার ৫০০ শ্রমিক কাজ করেন। কারখানার একজন সাধারণ শ্রমিককে প্রতি মাসে মূল বেতন দেওয়া হয় ৬ হাজার ৬১ টাকা ও অপারেটর পান ৯ হাজার ৮৭৫ টাকা। সরকার নির্ধারিত বেতনকাঠামো হিসাবে মাসে একজন পোশাকশ্রমিক ১২ হাজার ৫০০ টাকা ও অপারেটর পাবেন ১৫ হাজার টাকা।
সকাল সাড়ে আটটার দিকে শ্রমিকেরা কারখানার সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন। এ সময় সরকার নির্ধারিত বেতনকাঠামো অনুযায়ী বেতন-ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ সময় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে সকাল ৯টার দিকে গোলড়া হাইওয়ে থানা ও সাটুরিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুহাম্মদ কামরুল হাসানও ঘটনাস্থলে যান। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে কারখানার ভেতরে নেন। পরে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
পরে পুলিশ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম ও কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। পরে বেলা ১১টার দিকে বেতন বাড়ানোর আশ্বাসে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনিচ্ছুক কারখানার কয়েকজন শ্রমিক বলেন, সরকার নির্ধারিত বেতনকাঠামো বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে এলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি। এ কারণে সরকার নির্ধারিত বেতনকাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করেন।
কারখানার উপমহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. মোশারফ হোসেন বলেন, পোশাকশ্রমিকদের জন্য সরকার নতুন বেতনকাঠামো নির্ধারণ করেছে। তবে সুতা ও কাপড় তৈরি কারখানার শ্রমিকদের জন্য নতুন বেতনকাঠামোর আওতার মধ্যে পড়ে না।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুখেন্দু বসু বলেন, সরকার নির্ধারিত নতুন বেতনকাঠামোর দাবিতে ওই কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে মহাসড়ক থেকে তাঁদের সড়িয়ে নেওয়া হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুহাম্মদ কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ওই কারখানার শ্রমিকেরা সরকার নির্ধারিত নতুন বেতনকাঠামোর আওতায় পড়ে কি না, তা তিনি নিশ্চিত নন।