ছুটিতে বাড়ি গিয়ে হেরোইন ব্যবসার অভিযোগে রাজশাহী মহানগর পুলিশের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে ৫০০ গ্রাম হেরোইনসহ গোদাগাড়ী উপজেলার রেলগেট বাজার থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই পুলিশ সদস্যের নাম মো. নূরনবী ইসলাম (২৮)। তিনি রাজশাহী নগরের চন্দ্রিমা থানায় কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত। গত শুক্রবার তিনি সাত দিনের ছুটিতে যান। নূরনবী গোদাগাড়ী উপজেলার সারাংপুর পুলিশপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।
বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে রেলগেট বাজার থেকে হেরোইনসহ হাতেনাতে ওই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে আরও ৫০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে। রাতেই তাঁদের বিরুদ্ধে গোদাগাড়ী থানায় মামলা হয়। আজ রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার থেকে সাত দিনের ছুটিতে যান ওই পুলিশ কনস্টেবল। গতকাল রাতে গোদাগাড়ীর রেলগেট বাজার থেকে তাঁকে আটক করা হয়। এ সময় তাঁর হাতে প্লাস্টিকের তৈরি খাকি রঙের একটি বাজারের ব্যাগ ছিল। ওই ব্যাগে ৫০০ গ্রাম হেরোইন পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, গোদাগাড়ীর জোতগোসাইদাস গ্রামের মিঠুন আলীর (২৬) কাছ থেকে তিনি এ হেরোইন কিনেছেন। তিনি অন্য আরেকজনের কাছে ওই হেরোইন বিক্রির জন্য সেখানে অপেক্ষা করছিলেন।
গ্রেপ্তার নূরনবীর বরাত দিয়ে পুলিশ আরও জানায়, মিঠুন আলীর কাছে আরও হেরোইন আছে। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই রাতেই জোতগোসাইদাস গ্রামে মিঠুনের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে মিঠুনসহ সারাংপুর পুলিশপাড়া গ্রামের আরেক হেরোইন ব্যবসায়ী রবিউল ইসলামকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়। মিঠুনের দেহ তল্লাশি করে পুলিশ তাঁর কোমরে বাঁধা একটি পলিথিনের ব্যাগ থেকে ৫০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, কনস্টেবল নূরনবীর সঙ্গে গ্রেপ্তার দুজনই এলাকায় কখনো রাজমিস্ত্রি, আবার কখনো কৃষিকাজ করেন। এর ফাঁকে মাদক ব্যবসা করেন। তাঁদের নামে থানায় কোনো মামলা পাওয়া যায়নি। রাতেই রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ইনামুল ইসলাম বাদী হয়ে গোদাগাড়ী থানায় মামলা করেন।
মামলার বাদী এসআই ইনামুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে নূরনবী জানান, তিনি নগরের চন্দ্রিমা থানায় পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত।
এ বিষয়ে চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরান হোসেন বলেন, কনস্টেবল নূরনবী সাত দিনের ছুটিতে আছেন। হেরোইনসহ গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি তিনি ‘অফিশিয়ালি’ জানেন না। পুলিশের পক্ষ থেকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতে খায়ের আলম বলেন, ওই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। এখন অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তিনি মহানগর পুলিশে কর্মরত। এ জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, তিনি বলতে পারছেন না।