ভোলার চরফ্যাশনে একটি দেশি পাতিহাঁস কালো ডিম পাড়ছে। উপজেলার জিন্নাগড় ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রাঢ়ীর বাড়ির বাসিন্দা আবদুল মতিনের (৪৭) খামারে একটি পাতিহাঁস গত দুই দিনে দুটি কালো ডিম পেড়েছে। এ নিয়ে উপজেলার মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। লোকজন এখন ওই ডিম দেখতে আসছে।
খামারি আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর খামারের একটি পাতিহাঁস গতকাল বুধবার প্রথম একটি কালো ডিম পাড়ে। আজ বৃহস্পতিবারও আরেকটি কালো ডিম পেড়েছে হাঁসটি। প্রথম দিন পাড়া ডিমটি ছিল কুচকুচে কালো। আজকের ডিমটির কোথাও কোথাও নীলচে ছোপ রয়েছে, তবে বেশির ভাগ অংশ কালো। এ ডিম তিনি একটি আলাদা খাঁচার মধ্যে রেখেছেন। লোকজন এসে দেখে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাবেক এক প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, হাঁসের ডিম সাধারণত সাদা রঙয়ের হয়। কিন্তু কালো ডিম দেওয়া খুব অস্বভাবিক কিছু না। প্রথমবার ডিম পাড়ার সময় এমন হতে পারে। এটা সচরাচরই হয়। পরে ঠিক হয়ে যায়।
আবদুল মতিন আরও বলেন, তাঁর স্ত্রী তাসলিমা বেগম ঘরে হাঁস-মুরগি পালন করে সংসারে বাড়তি আয় করেন। আট মাস আগে প্রতিবেশীর কাছ থেকে ২১টি ছোট হাঁসের বাচ্চা কিনে আনেন তিনি। কাক, চিল, শিয়ালে নেওয়ার পর এবং রোগে ভুগে মারা যাওয়ার পর ১১টি হাঁস টিকে আছে।
দেশি হাঁসের কালো ডিম দেখতে বাড়িতে মানুষ ভিড় জমায়। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও সাংবাদিক আসেন।
আবদুল মতিনের স্ত্রী তাসলিমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর পালিত ১১টি দেশি হাঁসের মধ্যে ৮ মাস বয়সের একটি পাতিহাঁস গতকাল প্রথম ডিম পাড়ে। তবে ডিমের রং একেবারে কালো দেখে প্রথমে তিনি ভয় পেয়ে যান। পরে ডিমটি বাড়ির অন্যদের দেখান। মুহূর্তের মধ্যে কালো ডিমের খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। দেশি হাঁসের কালো ডিম দেখতে বাড়িতে মানুষ ভিড় জমায়। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও সাংবাদিক আসেন। আজকেও কালো ডিম পেড়েছে। তবে আগের দিনের থেকে একটু কম কালচে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার মণ্ডল আজ দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের কর্মকর্তা ওই খামারির বাড়িতে গেছেন। আজকের পাড়া ডিমটি গতকালের থেকে কম কালো। এক স্থানে নীলচে ছোপ। ঘষা দিলে এক বিন্দু কালো খোসা উঠে এসেছে। তাঁরা হাঁস ও তার ডিম পাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। এর বেশি এখন কিছু বলতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে গতকালও ইন্দ্রজিৎ কুমার মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেন, জিংডিং জাতের একপ্রকার হাঁস হালকা নীল রঙের ডিম দেয়, কিন্তু কোনো হাঁস কালো ডিম পেড়েছে কখনো শোনেননি, দেখেননি। তিনি আরও জানান, ভারতীয় ব্রিডের কাদারনাথ বা কালো মাসি জাতের মুরগি কালো ডিম পাড়ে, যার মাংসও কালো। হাঁসে কালো ডিম পাড়ার নেপথ্যে জরায়ুর কোনো সমস্যা হতে পারে। সাধারণত হাঁসের জরায়ুতে ডিমের খোসাটি ১৯-২০ ঘণ্টা আটকে থাকে। এভাবেই হাঁসটি যদি কালো ডিম পাড়া অব্যাহত রাখে, তাহলে হাঁস ও ডিম পরীক্ষাগারে পাঠাবেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।