ফরিদপুরের ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে অ্যাম্বুলেন্সের আগুনে তাসলিমা বেগমের (৫০) বাড়িতে মাতম চলছে। দুর্ঘটনায় তাসলিমার সঙ্গে তাঁর দুই মেয়ে ও চার নাতি নিহত হয়। আজ শনিবার সন্ধ্যায় তাসলিমার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর গ্রামে তাঁদের লাশ নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহত তাসলিমা বেগম ফেলাননগর গ্রামের সৌদিপ্রবাসী আজিজার শেখের স্ত্রী। তাসলিমা তিন মেয়ে ও এক ছেলের জননী। দুর্ঘটনায় তাসলিমার দুই মেয়ে কমলা বেগম (৩০), বিউটি বেগম (২৬), কমলার তিন সন্তান আরিফ (১২), হাসিব (১০) ও আফসা (১) এবং বিউটির ছেলে মেহেদী (১০) নিহত হয়। দুর্ঘটনায় দুই মেয়ের মৃত্যুর পর বেঁচে আছে এক মেয়ে চায়না ও এক ছেলে আনিস। আনিস এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।
দুর্ঘটনায় নিহত কমলার স্বামীর নাম আলমগীর। উপজেলার শেখর ইউনিয়নের মাইটকুমড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি। বিউটির স্বামী সার্জেন্ট মাহমুদ আলফাডাঙ্গার কুচিয়াগ্রামের বাসিন্দা। কমলা ঢাকার চকবাজারে বসবাস করতেন।
তাসলিমা বেগমের চাচাতো ভাশুর মো. মাসুদুর রহমান (৫২) বলেন, তাসলিমার স্বামী আজিজার শেখ বিদেশে থাকেন। দুই মাস আগে তাসলিমা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ঢাকার নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে আজ সকালে পরিবার নিয়ে বাড়ি ফিরছিল। ভাঙ্গা এলাকায় এলে উড়ালসড়কের বিভাজকে ধাক্কা লেগে গাড়িতে আগুন ধরে যায়। পরে তাদের সবাই মারা যায়।
তাসলিমার মেয়ে চায়না বেগম (২২) বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘এক মাস মাকে দেখি না। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে মা বাড়ি ফিরে আসছিল। কিন্তু নির্মম দুর্ঘটনায় মাসহ বোন, ভাগনে-ভাগনিদের হারালাম। এ শোক আমরা কীভাবে সইব?’
খবর পেয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারেফ হোসাইন, বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আবদুল ওহাব, গুনবহা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম তাসলিমার বাড়িতে যান।