গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতের তিন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাবের দাবি, এ তিনজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন ছাত্রদলের এক নেতা।
বুধবার দুপুরে রংপুর নগরের হাজীরহাট উত্তম এলাকায় নবনির্মিত র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-১৩–এর অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সোনারায় ইউনিয়ন ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মারুফ মিয়া (২৫), ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জয়নাল মিয়া ও জামায়াত কর্মী মোজাম্মেল হক (৫০)। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে জাহিদুল ইসলামকে হত্যা করা হয়।
র্যাব-১৩–এর অধিনায়ক বলেন, সোনারায় ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলামকে বিভিন্ন সময় জামায়াত ও বিএনপির কিছু দুষ্কৃতকারী হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল। রোববার রাত ১১টার দিকে জাহিদুল মোটরসাইকেলযোগে উপজেলার বামনডাঙ্গা থেকে ছাইতনতলা যাচ্ছিলেন। পথে শাখামারা সেতুর ওপরে পৌঁছানো মাত্র পূর্বপরিকল্পিতভাবে আসামিরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। এ সময় তাঁকে এলোপাতাড়ি লোহার রড, চায়নিজ কুড়াল, ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। রাতেই তাঁকে উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এরপর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
সোমবার রাতে নিহত ব্যক্তির বোন আনজুয়ারা বেগম বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন। এতে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
আরাফাত ইসলাম আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পরপরই আসামিরা বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় পুলিশ চারজন আসামিকে আটক করতে সক্ষম হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৪ নভেম্বর অভিযান চালিয়ে সুন্দরগঞ্জের হরিপুর ইউনিয়নের রাঘবচর এলাকা থেকে আসামি জয়নাল মিয়া, রংপুরের পীরগাছা থেকে মোজাম্মেল হক, রংপুর মহানগরী থেকে মারুফ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আসামি মারুফ মিয়া এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। মারুফ মিয়া পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ১২ নভেম্বর যুবলীগ নেতা জাহিদুলকে শাখামারা সেতুর ওপর নিয়ে আসেন।