মাহমুদুর রহমানের ওপর যখন হামলা হলো সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়ালে অন্যরাও রেহাই পেতেন। মনে রাখবেন, ‘সাংবাদিকেরাই কেবল সাংবাদিকদের রক্ষা করতে পারে। অন্য কেউ নয়। এ জন্য প্রয়োজন ঐক্য। আসুন, আমরা সেই অভিপ্রায়কে বাস্তব করতে উদ্যোগী হই।’
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি রুহুল আমীন গাজী স্মরণে আয়োজিত নাগরিক শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান বক্তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী এসব কথা বলেন। আজ শনিবার সিলেট নগরের সুবিদবাজার এলাকায় সিলেট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ওই শোকসভা ও দোয়া মাহফিল হয়। সিলেট মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের (এসএমইউজে) উদ্যোগে এ সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আলিমুল ইসলাম।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘আত্মসমালোচনা করলে বলতেই হবে, বহুলাংশেই আপস করছি আমরা। সত্য উচ্চারণে কিছু কণ্ঠস্বর কখনো জ্বলে ওঠে, আবার স্তিমিত হয়ে যাচ্ছে কিংবা থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু জ্বলে ওঠা এই কণ্ঠস্বরগুলো যদি সংঘবদ্ধ করা যায়, তবে অচলায়তন ভেঙে দেওয়া অসম্ভব নয়। কিন্তু আমরা শুধু রাজনৈতিক কারণে করি না।’
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এনামুল হকের (জুবের) সভাপতিত্বে ও এসএমইউজের সাধারণ সম্পাদক খালেদ আহমদের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমইউজের সভাপতি মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বদর।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আলিমুল ইসলাম বলেন, ‘প্রয়াত রুহুল আমীন গাজী সর্বশেষ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সময় অসুস্থ থাকার পরও রাজপথে নেমে সাংবাদিকদের সাহস জুগিয়েছেন।’
নাগরিক শোকসভায় আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মো. ফখরুল ইসলাম, ইবনে সিনা হাসপাতাল লিমিটেড সিলেটের চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুর রহমান ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক শামীমুর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাংবাদিক ওবায়দুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, শেখ হাসিনার সরকার রুহুল আমীন গাজীকে গ্রেপ্তার করে ১৭ মাস জেলে রাখে। সেখানে তাঁকে উপযুক্ত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অবহেলায় তাঁকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়। এ জন্য স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার এবং ওই সময় দায়িত্ব পালন করা কারাগারের জেলার ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা উচিত।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব বিকাশে গণমাধ্যমকে আরও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে। রাষ্ট্রের সবগুলো প্রতিষ্ঠান ব্যর্থ বা নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলেও মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে যে প্রদীপ শিখাটি জ্বলতে থাকে, তা হলো গণমাধ্যম। চারপাশে কেবল দাসত্ব আর তোষামোদী দেখে দেখে আমরা নির্বিকার হয়ে পড়েছি। সাংবাদিকতায় আমরা যাঁদের পরম্পরা বহন করছি, সেই গৌরবের ইতিহাস আমাদের সামান্যই প্রভাবিত করছে। আমরা এখন সাংবাদিকতার মহান ব্রতকে বিসর্জন দিয়ে অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার মানসে আছি।’