ছয় বন্ধু বসে ছিলেন চায়ের দোকানে। হঠাৎ এক যুবক এসে একজনকে পাশে ডেকে নেন। ছুরি ঠেকিয়ে যা আছে দিয়ে দিতে বলেন। টের পেয়ে আরেক বন্ধু এগিয়ে গেলে ছুটে আসেন ওই যুবকের সঙ্গে থাকা আরও দুজন। এরপর দুই বন্ধুকে ছুরিকাঘাত করে মুঠোফোন নিয়ে পালিয়ে যান ছিনতাইকারীরা।
রাজশাহী রেলস্টেশন এলাকায় গত রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী দুই বন্ধুর স্বজনেরা। ছুরিকাহত দুজন হলেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বাসুপাড়া গ্রামের কৌশিক কুমার ও একই গ্রামের অভিজিৎ কুমার। তাঁদের মধ্যে কৌশিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য রাজশাহীতে কোচিং করতে এসেছেন।
স্বজন ও বন্ধুরা বলছেন, কৌশিকের বুকে ৫০টি এবং অভিজিতের বুকে ৩০টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। কৌশিক হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও অভিজিতের পরিবার তাঁকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে।
নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন গতকাল সোমবার রাতে বলেন, তিনি ঘটনা শুনেই কৌশিকের বাবা ও তাঁর বন্ধুবান্ধবকে থানায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন। এরপর গতকাল রাতে তাঁদের এজাহার লিখে রেলওয়ে থানায় মামলা করার জন্য পাঠিয়েছেন।
আহত ছাত্রের বন্ধুরা জানান, গত রোববার রাতে এক বন্ধুর জন্মদিন উদ্যাপন করে ছয় বন্ধু মিলে রাজশাহী স্টেশনে চা পান করছিলেন। এ সময় এক যুবক ডাক দিয়ে পাশে ওভারব্রিজের সিঁড়ির কাছে নিয়ে যান কৌশিককে। পেটে চাকু ঠেকিয়ে যা আছে দিয়ে দিতে বলেন। পরে বিষয়টি সঙ্গে থাকা অভিজিতের নজরে এলে তিনি এগিয়ে যান। এ সময় ওই যুবকের সঙ্গে থাকা আরও দুজন এসে কৌশিক ও অভিজিৎকে বুকে চাকু দিয়ে আঘাত করেন এবং মুঠোফোন নিয়ে পালিয়ে যান।
কৌশিক এখনো রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পাশে রয়েছেন তাঁর মা বিউটি রানী। তিনি বলেন, ছেলে আগের দিন রাত থেকে ঘুমাতে পারেননি। ঘুমের ওষুধ দেওয়ার পর এখন একটু ঘুমিয়েছেন।
রাজশাহী রেলওয়ে থানার ওসি গোপাল কর্মকার গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, কৌশিকের ফুফাতো ভাই অন্তর কুমার প্রামাণিক বাদী হয়ে গতকাল রাতে থানায় মামলা করেছেন। একসঙ্গে যে ছয় বন্ধু ছিলেন, তাঁদের মধ্যে দুজন ঘটনার শিকার হয়েছেন। ওই বিষয়গুলো মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।