২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের সময় মো. শাহাব উদ্দিনের পেশা ছিল ‘ব্যবসা’। তিনি শুধু কৃষি খাত থেকে বছরে ১৮ হাজার টাকা আয় করতেন। ব্যাংকে জমা ছিল ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫৩ টাকা, যার পুরোটাই ছিল প্রবাসী ভাইদের দেওয়া। এখন তাঁর পেশা রাজনীতি। কৃষি খাত থেকে আয় হয় ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ লাখ ৫৯ হাজারে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা ও জুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য। তিনি ষষ্ঠবারের মতো এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর তিনি মন্ত্রী হন। নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে তাঁর সম্পদের চিত্র পাওয়া গেছে।
এবারের হলফনামায় পরিবেশমন্ত্রী বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৫০ হাজার টাকা, যা আসে কৃষি খাত থেকে। মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য হিসেবে পাওয়া সম্মানীর তথ্য হলফনামায় নেই। তবে প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের আয় দেখিয়েছেন ৫ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল কৃষি থেকে ৩৬ হাজার, সংসদ সদস্য হিসেবে পাওয়া বেতন-ভাতা ও জাতীয় সংসদ থেকে পাওয়া ভাতার পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ টাকার বেশি। হলফনামা অনুযায়ী, ২০১৪ সালে মন্ত্রীর পেশা ছিল ‘কৃষি, ব্যবসা’। ২০১৮ সালে তাঁর পেশা ছিল ‘ব্যবসা’।
হলফনামা অনুযায়ী, বর্তমানে শাহাব উদ্দিনের অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ১ কোটি ৭৪ লাখ ১ হাজার টাকা। এর মধ্যে আছে নগদ টাকা ২ লাখ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৮৪ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, ৮৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের জিপ গাড়ি, ৬০ হাজার টাকার আসবাব ও ইলেকট্রনিকসামগ্রী, ৪০ হাজার টাকা মূল্যের পিস্তল ও ৭ হাজার টাকা দামের একনলা বন্দুক।
২০০৮ সালে তাঁর অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল ৬ লাখ ৮ হাজার টাকা। যার মধ্যে নগদ ১৫ হাজার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা জমা আছে। তখনো শাহাব উদ্দিনের পিস্তল ও একনলা বন্দুক ছিল। তবে কোনো গাড়ি ছিল না। ২০১৪ সালের নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামায় তিনি ৪৮ লাখ টাকা মূল্যের জিপ গাড়ি থাকার তথ্য উল্লেখ করেছিলেন। ২০১৮ সালের হলফনামায় তিনি ৭৪ লাখ টাকা মূল্যের টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার ব্র্যান্ডের গাড়ি থাকার কথা জানিয়েছিলেন।
২০০৮ সালে শাহাব উদ্দিন নিজ নামে ১ লাখ টাকা মূল্যের কৃষিজমি ও ৯ লাখ টাকা মূল্যের উত্তরায় তিন কাঠা প্লটের কথা উল্লেখ করেছিলেন। এবার ১ লাখ টাকা মূল্যের ওই জমির পাশাপাশি উত্তরায় থাকা পাঁচ কাঠা অকৃষিজমির মূল্য দেখিয়েছেন ৩২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা।
২০০৮ সালে প্রবাসী ভাইদের কাছ থেকে উত্তরার প্লট কেনা বাবদ ৯ লাখ টাকা ও ব্যাংকে জমা ৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকা দেনার কথা উল্লেখ করেছিলেন শাহাব উদ্দিন। ২০১৪ সালেও প্রবাসী ভাইদের কাছে দেনা থাকার কথা উল্লেখ করেছিলেন শাহাব উদ্দিন। যার মধ্যে উত্তরায় পাঁচ কাঠা জমি বাবদ ৩৩ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ও জিপ গাড়ি কেনা বাবদ ২৮ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের পর আর সেই দেনা নেই তাঁর।