নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় একটি মসজিদের ছাদে ডাল কাটার সময় পল্লী বিদ্যুৎ লাইনে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সাতটার দিকে উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া দুই শিশু হলো উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের হোসেন সরদারবাড়ির মোহাম্মদ ফারুক হোসেনের ছেলে মো. জিসান (১০) ও একই গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে রাহাত হোসেন (১২)। জিসান স্থানীয় চরবাটা হাজীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। আর রাহাত চরবাটা ইসমাইলীয় দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। তারা সম্পর্কে মামা-ভাগনে। এ ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে মো. সাগর (১২) নামের অপর এক শিশু।
প্রত্যক্ষদর্শী শিশু মো. সাগর বলে, ডাল কাটার সময় জিসানকে হঠাৎ কাঁপতে দেখে রাহাত তাকে ধরতে যায়। পরে দুজনই কাঁপতে থাকে। এ সময় সে মসজিদের পাশের গাছ বেয়ে নিচে নেমে ঘটনাটি ইমামকে জানায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের স্থানীয় জামে মসজিদের ছাদের ওপর দিয়ে পল্লী বিদ্যুতের লাইন গেছে। আজ সকাল সাতটার দিকে মসজিদের ইমাম আবু তাহের মক্তবে আসা তিন শিশুকে ছাদের ওপরে পড়া গাছের ছোট ডাল কেটে দেওয়ার জন্য বলেন। ওই তিন শিশু মসজিদের ছাদের ওপর উঠে ডাল কাটার সময় জিসান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তখন রাহাত তাকে বাঁচাতে গিয়ে সে–ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। একই সঙ্গে থাকা অপর শিশু সাগর দুজনকে কাঁপতে দেখে দৌড়ে পাশের গাছ বেয়ে নিচে নেমে মসজিদের ইমামকে ঘটনা জানায়। তখন ইমাম আবু তাহের বিদ্যুৎ কার্যালয়ে কল করে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করান। শিশু দুটির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি পালিয়ে যান।
নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি সুবর্ণচরের উপমহাব্যবস্থাপককে (ডিজিএম) খোঁজ নিয়ে জানাতে বলেছেন। মসজিদের ওপর দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন যায়নি। বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ হওয়ার পর লাইন ঘেঁষে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় মানুষ লাইন স্থানান্তরের বিষয়ে কোনো আবেদন করেননি। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। চাঁদা তুলে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি পরিবারকে সহযোগিতার চেষ্টা চলছে।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, মসজিদের ছাদে উঠে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।