পঞ্চগড় চিনিকলের দখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধারে প্রশাসনের অভিযান। আজ বুধবার দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা পৌরসভার থানাপাড়া এলাকায়
পঞ্চগড় চিনিকলের দখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধারে প্রশাসনের অভিযান। আজ বুধবার দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা পৌরসভার থানাপাড়া এলাকায়

বিএনপি নেতার দখল থেকে পঞ্চগড় চিনিকলের জমি উদ্ধার

পঞ্চগড়ে বিএনপি নেতার দখল থেকে চিনিকলের জমি উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে জেলার বোদা পৌরসভার থানাপাড়া এলাকায় দখলদারদের টিনের চালাঘর ভেঙে ফেলে তাঁদের লাগানো গাছের চারাও উপড়ে ফেলা হয়। পরে সেখানে চিনিকলের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়।

এর আগে ৭ আগস্ট (বুধবার) বোদা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান ওই জমি দখলে নেন। ক্রয়সূত্রে ওই জমির মালিকানা দাবি করে প্রথমে আরিফুর রহমানের নামে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়। পরে গত রোববার সকালে ওই সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলে আরিফুরের বাবা আবদুল কুদ্দুসের নামে নতুন সাইনবোর্ডে টাঙানো হয়।

এ ঘটনায় চিনিকল কর্তৃপক্ষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), স্থানীয় সেনাক্যাম্প ও বোদা থানা-পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার প্রথম আলোতে ‘চিনিকলের জমি দখলে বিএনপি নেতা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া এ ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এরপর বুধবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিনিকলের সাবজোনের এসইডিওর কোয়ার্টার চত্বরে ওই জায়গা উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়। সেই সঙ্গে পরিত্যক্ত বাসভবনটিতে তালা দিয়ে সিলগালা করে দেওয়া হয়।

এ সময় ইউএনও শাহরিয়ার নজির, বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হকসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া পঞ্চগড় চিনিকলের ইনচার্জ সাইফুল ইসলামসহ চিনিকলের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

জমি উদ্ধারের পর চিনিকলের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়

এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে জমি দখলের বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, ওই জমির প্রকৃত মালিক তাঁর বাবা আবদুল কুদ্দুস। জনপ্রতিনিধি হিসেবে কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে তিনি ওই জমি দখল করেননি।

পঞ্চগড় চিনিকলের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ওই জমিটি সরকারি সম্পত্তি। সেখানে চিনিকলের সাবজোনের কোয়ার্টার ছিল। ১৯৭৭ সালে কেনা ওই জমিতে চিনিকলের স্থাপনা আছে। দখলেও ছিল। কিন্তু ৭ আগস্ট হঠাৎ করেই জমিটি দখল করে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়।

ইউএনও শাহরিয়ার নজির মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, জমি দখল হওয়ার পর চিনিকল কর্তৃপক্ষ একটি অভিযোগ দিয়েছিল। ওই জমিটি সরকারি সম্পত্তি। বুধবার দুপুরে চিনিকল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জমি দখলে নিয়েছে।