নোয়াখালী সদর উপজেলায় শ্বশুরবাড়ি থেকে মো. এমরান হোসেন ওরফে মুন্না (২৭) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সুধারাম থানার পুলিশ বিনোদপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করে।
নিহত এমরান হোসেন সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের পশ্চিম চরউরিয়া গ্রামের আহমদ উল্যার ছেলে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন এমরানকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। তবে ইমরানের শ্বশুরের দাবি, এমরান আত্মহত্যা করেছেন।
নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা জানিয়েছেন, চার বছর আগে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে এমরান বিনোদপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের মোরশেদ আলমের মেয়ে শিল্পী আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর এমরানের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী শিল্পীর ঝগড়াঝাঁটি হতো।
এমরানের বাবা আহমদ উল্যাহ বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে গত দুই মাস ধরে স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়িসহ তাঁদের বাড়ির (শ্বশুরবাড়ি) লোকজনের সঙ্গে এমরানের বিরোধ চলছে। দুদিন আগে এমরান শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান। এরপর আজ সোমবার ভোরে শ্বশুরবাড়ি থেকে জানানো হয়, এমরান আত্মহত্যা করেছেন।
আহমদ উল্যাহ অভিযোগ করে বলেন, তাঁর ছেলে আত্মহত্যা করেননি। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এমরানকে পিটিয়ে হত্যা করে আত্মহত্যার গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তিনি হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানান।
তবে ইমরানকে নির্যাতন কিংবা হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শ্বশুর মোরশেদ আলম। তিনি বলেন, এমরান নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আজ ভোরে আত্মহত্যা করেছেন।
লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী সুধারাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুজ জাহের প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ঘরের মেঝেতে লাশ শোয়ানো অবস্থায় পেয়েছেন। লাশের গলায় কালো দাগ ছাড়া শরীরের অন্য কোথাও আঘাতের কোনো চিহ্ন তিনি দেখেননি। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আজ সোমবার সকালে এমরান হোসেন নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে হত্যা করেছেন। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আগে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আজ দুপুর পর্যন্ত নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।