টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতা ফারুক হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি

টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামিদের বিচারের দাবিতে বুধবার শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে আওয়ামী লীগ
ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ও তাঁর ভাইদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন দলটির নেতারা। আজ বুধবার ফারুক আহমেদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে ফারুক আহমেদের কবরে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে পরিবার ও জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। দুপুরে হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

এর আগে স্থানীয় শহীদ মিনারে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনির, নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান ও সুভাষ চন্দ্র সাহা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হোসেন প্রমুখ।

এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে সেখানে গণভোজের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া ফারুক আহমেদের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর কলেজপাড়ার বাসায় কোরআনখানি ও দরিদ্রদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়।

প্রসঙ্গত, বহুল আলোচিত হত্যা মামলাটি টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। সূত্র জানায়, মামলায় এখন পর্যন্ত ২৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরের কলেজপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ির পাশ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। ২০১৪ সালে মামলায় জড়িত সন্দেহে আনিসুল ইসলাম ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

আদালতে তাঁদের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান, তাঁর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান ও ছাত্রলীগের তৎকালীন সহসভাপতি সানিয়াত খানের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। তদন্ত শেষে গোয়েন্দা পুলিশ ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। এতে সংসদ সদস্য আমানুর রহমান, তাঁর ভাইদেরসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার আসামি আমানুর রহমান খান আত্মসমর্পণ করে তিন বছর কারাগারে থাকার পর বর্তমানে জামিনে আছেন। তাঁর ভাই সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান দুই বছর আগে আদালতে আত্মসমর্পণের পর এখনো কারাগারে। তবে জাহিদুর রহমান খান ও সানিয়াত খানেরা এখনো পলাতক। আলমগীর হোসেন নামের এক আসামি কারাগারে আছেন। অন্য আসামিদের মধ্যে আনিসুর রহমান ও মো. সমীর কারাগারে মারা গেছেন। জামিনে আছেন মোহাম্মদ আলী, মাসুদুর রহমান, নাসির উদ্দিন, ফরিদ আহমেদ ও বাবু।