সরকার বিদ্যুৎ দেওয়ার নাম করে বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র করে মোটা অঙ্কের টাকা বিদেশে পাচার করছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন না হলেও ক্যাপাসিটি চার্জের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা তাদের দেওয়া হয়েছে। দেশে বিদ্যুৎ খাতে লুটপাট হয়েছে।
আজ ঢাকার নবাবগঞ্জের বর্ধনপাড়া এলাকায় ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘আপনাদের (সরকার) কাছে নাকি টাকা নাই। তাই কয়লা গ্যাস কিনতে পারছেন না। অথচ জনগণ বিদ্যুৎ বিল বাকি রাখে না। তাহলে এই বিদ্যুৎ যায় কোথায়? সরকার জনগণের টাকা, গরিবের টাকা বিদেশে পাচার করেছে। দেশে বিদ্যুতের প্রয়োজন ১৪ হাজার মেগাওয়াট। অথচ আছে ২৪ হাজার মেগাওয়াট। তাহলে কেন এত লোডশেডিং হচ্ছে? বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির কারণে এ অবস্থা হয়েছে।’
প্রধান বক্তা জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক বলেন, ‘এক বছর আগে তারা (সরকার) বলেছে, সারা দেশে গ্রামগঞ্জে শতভাগ বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে। অথচ এখন লোডশেডিং। মানুষের গায়ে গরম লাগে, তারা এটা বোঝেন কি না, সেটা জানি না। ১৯৯৬ সালে হাজার হাজার শেয়ার ব্যবসায়ীকে শেষ কইরা ফালাইছে আপনাদের এলাকার লোক। দরবেশ দেহেন নাই? পীর সাব হুজুর চেনেন? ওই হুজুর কামাইছে। তারে দিয়ে আওয়ামী লীগও কামাইছে। মানুষ যখন কোভিডে দিশেহারা, তখন এই হুজুর কোভিড ভ্যাকসিন আইন্যা ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা লাভ করছে।
মুজিবুল হক বলেন, আমেরিকা যে ভিসা নীতি গ্রহণ করেছে, তাতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলই চিন্তায় পড়ে গেছে। বিএনপি কানাডা, টরন্টো, দুবাইতে বাড়ি করছে। আর আওয়ামী লীগও একই দেশে বাড়ি করছে। এই নীতিতে দুই দলেরই বাঁশ। জাতীয় পার্টি গরিব পার্টি। আমরা লুটপাট করি নাই। লুটপাট করে এই দুই সরকার। আওয়ামী লীগ ১২ বছরে জনগণের কাছ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে দুর্নীতিতে চারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ খাইতে খাইতে পেট এত উঁচু করছে যে ১ লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক লোন করেছে। তাদের চিন্তা নেই। তারা কোটি কোটি ডলার পাচার করছে। পদ্মা সেতুর পর কোটি কোটি টাকা খরচ করে রেল লাইনের কী দরকার ছিল? যেখানে মানুষ চাকরি হারাচ্ছে, মানুষ খেতে পারছে না।’
মুজিবুল হক আরও বলেন, লাখ লাখ ছেলেমেয়ে বেকার। তাঁদের চাকরি নেই। কীভাবে তাঁদের কর্মসংস্থান হবে, সেটি নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ—কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় এলে সারা দেশে শিক্ষাব্যবস্থা পাল্টে বেকার সমস্যা দূর করবে। যে শিক্ষাব্যবস্থা হবে কর্মমুখী, সেই শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা হবে।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সালমা ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমা আক্তার, মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, আলমগীর শিকদার, জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি শেরিফা কাদের, ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইসরাফিল প্রমুখ।
সম্মেলনে ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয়বারের মতো সালমা ইসলামকে সভাপতি ও মোহাম্মদ ইসরাফিলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।