টেকনাফে নাফ নদী দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা ফিরিয়ে দিল বিজিবি

মিয়ানমার সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালীর আঞ্জুমান পাড়ায় নিচু খেতে জমে থাকা পানি পেরিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ঢল
প্রথম আলো ফাইল ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদী দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুকে ফিরিয়ে দিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। আজ বুধবার ভোরের দিকে নাফ নদী দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ওই রোহিঙ্গাদের নৌকা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তবে এ প্রসঙ্গে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নাফ নদীর ওপারে মংডু শহরের নিকটবর্তী খায়েনখালী খালসহ কয়েকটি এলাকার আশপাশে রোহিঙ্গারা জড়ো হয়েছেন। তাঁরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে টেকনাফে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছেন। গতকাল বিকেল পাঁচটার পর থেকে আজ সকাল পর্যন্ত মিয়ানমারের কাউয়ারবিল ও পেরাংপুরু এলাকায় একের পর এক মর্টার শেল ও বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সেসব স্থানে আরাকান আর্মি ও দেশটির সরকারি বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধের তীব্রতা বাড়ছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, মিয়ানমারের মংডু টাউনশিপ এলাকায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস। বর্তমানে যেখানে হামলা হচ্ছে, সেখানে অধিকাংশ রোহিঙ্গার বসবাস। তাদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ বাংলাদেশের টেকনাফে পালিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে যেহেতু নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গাকে ঠাঁই দেওয়া হবে না বলে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকার জানিয়ে দিয়েছে, সেহেতু বিজিবি রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ প্রতিহত করছে।

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা সাড়ে তিন মাস ধরে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির লড়াই চলছে। সম্প্রতি মংডু টাউনশিপের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে দুটি শহরসহ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৪টি সীমান্তচৌকি, রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপের বেশ কয়েকটি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। এখন মংডু শহর দখলের জন্য লড়ছে তারা।

বিজিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে ৩ হাজার ৩৫৪ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। পরে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠায় বিজিবি। তাদের মধ্যে ৮৪৮ জন নারী, ৭৪৯ জন শিশু এবং ১ হাজার ৭৫৭ জন পুরুষ। এ সময় তিন রোহিঙ্গাকে থানা-পুলিশে দেওয়া হয়।