বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শনে যাচ্ছে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের একটি প্রতিনিধিদল। ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ওই বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কাল সোমবার বিদ্যালয়টি পরিদর্শনের পর কেন্দ্র স্থানান্তর বা রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবে প্রতিনিধিদল। দুই দিন আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিকল্প ব্যবস্থা রেখে ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয়ে কেন্দ্র রাখার সুপারিশ করা হয়েছিল।
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমারের সীমান্তচৌকিতে গোলাগুলির ঘটনায় ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্র নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। সীমান্ত পরিস্থিতি এখন শান্ত হলেও মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষী, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার ১৬৬ জন সদস্যকে ওই বিদ্যালয়ের একটি ভবনে রাখা হয়েছে। তাঁদের সরিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা না পাওয়ায় বিজিবির গাড়ি এসে ফিরে গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলে কাল-পরশু যেকোনো সময় বিজিপি সদস্যদের স্থানান্তর করা হবে জানিয়েছেন বিজিবির কর্মকর্তারা।
শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধিদল কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় পরিস্থিতি অশান্ত হলে ঝুঁকির বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করবেন। সব দিক বিবেচনা করে পরীক্ষাকেন্দ্র স্থানান্তরের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রয়োজনে সরেজমিনে দেখে স্থানান্তরের স্থানগুলো নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শান্তনু কুমার দাশ প্রথম আলোকে বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয়ে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে কিছুটা দূরে আলাদা একটি ভবনে রাখা হয়েছে। তাঁদের সরিয়ে না নিলেও পরীক্ষার কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। হঠাৎ কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেওয়ার বিকল্প প্রস্তুতি রেখে কেন্দ্রটি বহাল রাখার পক্ষে তাঁরা সুপারিশ করেছেন। তবে শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শক দলের সিদ্ধান্তেই বহাল রাখা বা না রাখার বিষয়টি নির্ভর করবে। সীমান্তের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।
সূত্রে জানা গেছে, ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়মিত ৪৬০ জন ও অনিয়মিত ৪২ জন এসএসসি পরীক্ষার্থী আছে। বৃহস্পতিবার থেকে পরীক্ষা শুরু হবে। চলবে আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত।
ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের তুমব্রু রাইট ক্যাম্প, তুমব্রু লেফট ক্যাম্প ও ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি গত সপ্তাহে রাখাইন রাজ্যের বিদ্রোহীরা দখল করে নিয়েছেন। ওই সময় দুই পক্ষের লড়াইয়ে টিকতে না পেরে বিজিপি, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার ৩৩০ সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও উখিয়ায় পালিয়ে এসে আশ্রয় নেন। তাঁদের মধ্যে ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয়ে ১৬৬ জনকে রাখা হয়েছে।