আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী দল। আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক অনেক গভীরে। ইচ্ছা করলেই ১০ ডিসেম্বর মহাসমাবেশ করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হৈবতপুরে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি সংগ্রহশালা ও ধান কাটা কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব সায়েদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মনজু প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বিভিন্ন গণসমাবেশে বিএনপি নেতাদের দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘হেফাজতও এমন কথা বলেছিল, শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়েছিল। সারা জাতি টেলিভিশনের দিকে তাকিয়ে ছিল। রাত বোধ হয় পোহাবে না। রাতের মধ্যেই আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হবে। খালেদা জিয়াও খুশিতে আত্মহারা হয়ে বিএনপি নেতা–কর্মীদের বলেছিলেন যে শাপলা চত্বরে গিয়ে হেফাজতের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য। এরশাদ সাহেব ফ্রিজ থেকে পানি বের করে হেফাজত নেতাদের পান করাচ্ছিলেন। কিন্তু আমরা কী দেখলাম? রাত আড়াইটা-তিনটার দিকে শাপলা চত্বর পরিষ্কার হয়ে গেছে। যদি ১০ ডিসেম্বর এ রকম কিছু করতে চায়, ওই রকম পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
দেশে খাদ্যঘাটতি ও ২০২৩ সালে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা নাকচ করে দিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এবার প্রচুর পরিমাণে আমন ধান উৎপাদন হয়েছে। ফলে দুর্ভিক্ষের কোনো শঙ্কা নেই। দেশে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছে। কোনো দুর্ভিক্ষ হবে না, খাদ্যসংকট হবে না। তবে ইউক্রেনের যুদ্ধ চলমান থাকলে মানুষের একটু কষ্ট হতে পারে। রাশিয়া ও ইউক্রেন বিশ্বের বড় রপ্তানিকারক দেশ। তাদের যুদ্ধের প্রভাব হিসেবে প্রধানমন্ত্রী জনগণকে বারবার সতর্ক করছেন। বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দার পূর্বাভাস হিসেবে আমাদের সতর্ক হতে হবে।’
চুয়াডাঙ্গার কৃষি খাতের সম্ভাবনার প্রসঙ্গ তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চুয়াডাঙ্গার কৃষি হবে বাংলাদেশের মডেল। আধুনিক, উন্নত এবং কৃষকের জন্য লাভজনক কৃষি হলো অর্থকরী কৃষি। ফলমূল, শাকসবজিতে বিপ্লব ঘটবে চুয়াডাঙ্গায়।
কৃষিমন্ত্রী এর আগে এশিয়ার বৃহত্তম কৃষি বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান দত্তনগর কৃষি খামার পরিদর্শন এবং জীবননগর উপজেলার সন্তোষপুরে কৃষক জাহিরুল ইসলামের খেতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের খেত, সদর উপজেলার রাঙ্গিয়ারপোতায় দেশের প্রথম বাণিজ্যিক আনারবাগান পরিদর্শন করেন। বিকেলে কৃষিমন্ত্রী দামুড়হুদার ইব্রাহিমপুর মেহেরুন্নেছা পার্কে নবান্ন উৎসব, কৃষিপ্রযুক্তি মেলা ও কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন এবং কৃষকদের মধ্যে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করেন। সবশেষে আলমডাঙ্গা কলাকেন্দ্রের শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।