মোহাম্মদ সিয়াম
মোহাম্মদ সিয়াম

গাড়িচালক হিসেবে সৌদিতে গিয়ে করতেন ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যু

১৫ মাস আগে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ধারদেনা করে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার মোহাম্মদ সিয়াম (২২)। গাড়ি চালানোর কাজ নিয়ে সৌদিতে গিয়ে তিনি ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করতেন। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনি মারা গেছেন।

মারা যাওয়া মোহাম্মদ সিয়াম দেবীদ্বার উপজেলার ওয়াহেদপুর গ্রামের বরবাড়ির মো. আসুম উদ্দিনের ছেলে। তাঁর মৃত্যুতে পুরো পরিবার বাক্‌রুদ্ধ। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সিয়াম ছিলেন সবার বড়। ছোট ভাই সিফাতের বয়স ১১ আর ছোট বোন হাবিবা আক্তারের বয়স ৮।

আজ রোববার সন্ধ্যায় সিয়ামের চাচা জসিম মিয়া জানান, রিয়াদের একটি মাদ্রাসার গাড়িচালক হিসেবে কাজ করতে গেলেও ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করতেন সিয়াম। গতকাল পানির মোটরের কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যান। সিয়াম পরিবারের বড় সন্তান। সংসারের হাল ধরতেই গত বছর প্রবাসে পাড়ি দেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সিয়ামের বাবা আসুম উদ্দিন ১৮ বছর সৌদি আরবে প্রবাসজীবন কাটিয়ে গত জুনে অসুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন। দীর্ঘ প্রবাসজীবনে তেমন কিছুই করতে পারেননি। উল্টো অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ছেলে প্রবাসে যাওয়ায় তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন। সিয়াম প্রবাসে যাওয়ার পর তাঁর আয় দিয়েই চলত পুরো পরিবার।

ছেলের লাশ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন সিয়ামের মা মোর্শেদা বেগম। মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই তিনি বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। মোর্শেদা বলেন, ‘আমার বাবা আমার আগে চলে গেল। এখন আমরা কীভাবে থাকব?’

চাচা জসিম মিয়া বলেন, বিদেশে গিয়ে উপার্জিত অর্থ দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি মানুষের ঋণ পরিশোধ করার চেষ্টা করেছেন সিয়াম। তবে এখনো তাঁর আড়াই লাখ টাকার মতো ঋণ আছে। একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যুতে এখন পুরো পরিবার অন্ধকারে।