কক্সবাজার শহরে এবিসি ঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে আজ। ওই এলাকার কয়েক শ গজ দূরে বৈদ্যঘোনা এলাকা ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড় কেটে মাটির ঘর তোলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে
কক্সবাজার শহরে এবিসি ঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে আজ। ওই এলাকার কয়েক শ গজ দূরে বৈদ্যঘোনা এলাকা ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড় কেটে মাটির ঘর তোলা হয়েছে।  আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে

তিন সপ্তাহের ব্যবধানে কক্সবাজারে পাহাড়ধসে আরও দুই নারী-শিশুর মৃত্যু

অব্যাহত ভারী বর্ষণে কক্সবাজার শহরে পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনায় পাঁচ বছরের এক শিশু ও একজন গৃহবধূ মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে শহরের বেশ কয়েকটি স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে শহরের এবিসি ঘোনা এলাকায় মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা আক্তার (৩০) ও সিকদার বাজার এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হাসান (৫) মাটি চাপা পড়ে মারা যায়।

এর আগে গত ২১ জুন হরের বাদশাঘোনা এলাকায় পাহাড়ধসে এক দম্পতির মৃত্যু হয়। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে পাহাড়ধসে চারজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। এরপরও বন্ধ হয়নি পাহাড় কাটা ও পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস।

জেলায় গতকাল বুধবার দুপুর থেকে আজ দুপুর ১২ পর্যন্ত থেমে থেমে ভারী বর্ষণ হচ্ছিল। একটানা বর্ষণের কারণে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান বলেন, নিহত জমিলা আক্তার আজ সকালে রান্নাঘরে কাজ করছিলেন।

তাঁর স্বামী আরেক কক্ষে ঘুমাচ্ছিলেন। সেখানে হঠাৎ পাহাড় ধসে পড়লে জমিলা চাপা পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত জমিলার স্বামী মোহাম্মদ করিম বলেন, আজ সকাল ছয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। জমিলা তখন নাশতা তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় পাহাড়ের একখণ্ড মাটি ধসে বসতঘরের ওপর পড়ে। তাতে চাপা পড়ে জমিলার মৃত্যু হয়।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আশিকুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই জমিলার মৃত্যু হয়েছে। তাঁর মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

এর আগে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিকদার বাজার এলাকায় ঘরের মাটির দেয়াল চাপা পড়ে মারা যায় নাজমুল হাসান নামের পাঁচ বছর বয়সী এক শিশু। পরিবারটি জানায়, ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসে বিশাল এক খণ্ড নাজমুলদের ঘরের ওপর পড়ে। তাতে মাটির দেয়াল ভেঙে সে চাপা পড়ে। স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থল থেকে তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।

কক্সবাজারে পাহাড় কেটে বিপজ্জনকভাবে তৈরি করা হচ্ছে পাকা বাড়ি

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারে একটানা ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এতে বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে থাকা লোকজনকে সরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে এলাকায় প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, জেলায় এমন ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকবে। কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এ বি হান্নান বলেন, গতকাল দুপুর ১২টা থেকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত কক্সবাজারে ২০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২১ জুন ভোর চারটার দিকে শহরের বাদশাঘোনা এলাকায় পাহাড়ধসে এক দম্পতির মৃত্যু হয়। তাঁরা হলেন বাদশা ঘোনা ওমর ফারুক জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আনোয়ার হোসেন (২৭) ও তাঁর স্ত্রী মাইমুনা আক্তার (২০)। নিহত আনোয়ার কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নাজির হোসেনের ছেলে।