সিলেটে আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে ছাত্রলীগ আবারও আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা, রড, হকিস্টিক ও লাঠি হাতে মহড়া দিচ্ছে
সিলেটে আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে ছাত্রলীগ আবারও আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা, রড, হকিস্টিক ও লাঠি হাতে মহড়া দিচ্ছে

সিলেটে বিভিন্ন সড়কে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের মহড়া

সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে ছাত্রলীগ আবারও আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা, রড, হকিস্টিক ও লাঠি হাতে মহড়া দিচ্ছে। আজ রোববার দুপুর ১২টার পর থেকে নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমন মহড়া দেখা গেছে। এসব মহড়ায় ছাত্রলীগের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরাও ছিলেন।

এর আগে গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের ঠেকাতে ছাত্রলীগ নগরের মদিনা মার্কেট এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছিল। ওই মিছিল চলাকালে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের চার নেতা-কর্মীর হাতে চারটি আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আজ বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল। সেখানে যোগ দিতে ছাত্র-জনতা উপস্থিত হলে দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও শটগানের গুলি ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত এক শ ছাত্র-জনতা আহত হন।

পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার পরপরই মূলত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা একাধিক ভাগে বিভক্ত হয়ে নগরের বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, বারুতখানা, জেলরোড, চৌহাট্টা, কোর্ট পয়েন্ট, নয়া সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দেওয়া শুরু করে। এ সময় প্রায় সবার হাতেই রামদা, রড, হকিস্টিক, চাকু, লোহার পাইপ ও লাঠি দেখা গেছে। এর বাইরে অন্তত ১০ থেকে ১৫ জনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে। এ কারণে আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অনেক শিক্ষার্থী কোর্ট পয়েন্ট এলাকার কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছিলেন। এসব শিক্ষার্থীর ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগ যৌথভাবে হামলা চালিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। এ ছাড়া ছাত্রলীগের একাধিক নেতা-কর্মী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া দিচ্ছেন। যেখানে শিক্ষার্থীদের পাচ্ছেন, সেখানেই তাঁরা পেটাচ্ছেন।

বেলা দুইটার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের জেলরোড, বারুতখানা ও জিন্দাবাজার এলাকায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মহড়া দিচ্ছেন। এ সময় অনেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তবে তাৎক্ষণিকভাবে অস্ত্রধারীদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এর বাইরে প্রায় সবার হাতেই দেশি অস্ত্র ছিল। একইভাবে নগরের চৌহাট্টা, কোর্ট পয়েন্ট ও জল্লারপাড় এলাকায়ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মহড়া দেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করলেও তিনি ধরেননি। ছাত্রলীগের প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রলীগের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়ার বিষয়টি জানা নেই।