দিনাজপুরের বিরামপুরে এক যুবলীগ নেতার গুদাম থেকে পাচারের অভিযোগে ওএমএসের (খোলাবাজার) ৫৪০ কেজি চাল জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভ্যানগাড়িতে করে পাচারের সময় পৌর শহরের কলেজ বাজারের বটতলী-পলাশবাড়ী রাস্তা থেকে ১৪ বস্তা চাল আটক করেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। পরে বাজারের একটি দোকান থেকে আরও চার বস্তা চাল উদ্ধার হয়।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার নাম আবু হেনা মোস্তফা কামাল। তিনি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি। আবু হেনা ওএমএসের চালের একজন পরিবেশক। সরকারি চাল পাচারের ঘটনায় জেলা খাদ্য দপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, বৃহস্পতিবার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সরকার ঘোষিত ওএমএসের চাল বিতরণের শেষ দিন ছিল। সকালে কলেজ বাজারের পরিবেশক আবু হেনার গুদাম থেকে ১৪ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি) চাল দোশরা-পলাশবাড়ী গ্রামের ভ্যানচালক আল মামুন তাঁর ভ্যানে করে নিয়ে পলাশবাড়ীর দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিরামপুর পৌর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মিজানুর রহমান এবং স্থানীয় বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম ভ্যানসহ চালগুলো আটক করেন।
খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে চালগুলো জব্দ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিমল সরকার। এ সময় বাজারের আবদুল গফফারের দোকানে তল্লাশি করে আরও চার বস্তা ওএমএসের চাল উদ্ধার করেন ইউএনও। জব্দ করা ৫৪০ কেজি চাল সরকারি গুদামে রাখা হয়েছে।
চাল ব্যবসায়ী আবদুল গফফার বলেন, তিনি পরিবেশক আবু হেনার গুদাম থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে চার বস্তা চাল কিনেছিলেন।
ওএমএস চাল পাচারের বিষয়টি অস্বীকার করে যুবলীগ নেতা আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, প্রশাসনের জব্দ করা চাল তাঁর গুদামের নয়। তাঁর গুদাম থেকে চাল পাচারের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়েছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা গোলাম মওলা। তিনিও এই কমিটির সদস্য। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা আগামী তিন কার্যদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন বলে জানান তিনি।
তদন্ত কমিটির প্রধান সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিপ্লব কুমার সিংহ রায় বলেন, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন। বিষয়টি আরও তদন্ত করা হচ্ছে।
ইউএনও পরিমল সরকার বলেন, এ ঘটনায় স্থানীয় ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে মিজানুর রহমান নামের একজন লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিন সদস্যের একটি তদন্ত গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী ৭ দিনের ভেতর প্রতিবেদন জমা দেবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে পরিবেশকের ডিলারশিপ বাতিল করা হবে। এ ছাড়া বিভাগীয় অভিযোগ হলে থানা–পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।