গুলিতে নিহত হৃদয়ের বোনকে চাকরি দিল পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার বোন মিতু রানীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিচ্ছেন পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার (২২) বোন মিতু রানীকে চাকরি দিয়েছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কাজী রফিকুল ইসলাম হৃদয় তরুয়ার বড় বোন মিতু রানীর হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের শাখাপ্রধান মুহাম্মদ ইমদাদুল হক প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় টিউশনি করে ফেরার পথে চট্টগ্রামের চাটগাঁ আবাসিক এলাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলছিল। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ জুলাই ভোর পাঁচটার দিকে তিনি মারা যান।

হৃদয়ের বাবা রতন চন্দ্র তরুয়া ও মা অর্চনা রানী। তাঁর বাবা একজন কাঠমিস্ত্রী। তাঁদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ঘটকের আন্দুয়া গ্রামে। অনেক বছর ধরে জেলা শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন তাঁরা। হৃদয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়া

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের শাখাপ্রধান মুহাম্মদ ইমদাদুল হক জানান, ‘হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার বোন মিতু রানীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আজ বেলা ১১টায় উপাচার্য কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কাজী রফিকুল ইসলাম মিতুর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় হৃদয়ের বাবা রতন চন্দ্র তরুয়া ও মা অর্চনা রানী উপস্থিত ছিলেন।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এস এম হেমায়েত জাহান, সিএসই অনুষদের জামাল হোসেন, মোহাম্মাদ আতিকুর রহমান, প্রক্টর মো. আবুল বাশার খান, মো. খোকন হোসেন, ছাত্রবিষয়ক উপ-উপদেষ্টা এ বি এম সাইফুল ইসলাম, ডেপুটি রেজিস্ট্রার আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কাজী রফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে পটুয়াখালী শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকায় হৃদয় চন্দ্র তরুয়াদের ভাড়া বাসায় গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান। উপাচার্য তখন তাঁদের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন এবং বোনকে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির আশ্বাস দেন। এর আগে ১৪ আগস্ট হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।