সাজিদা খাতুন (৫৫) নামের এক ভোটার আজ শনিবার সকাল সোয়া আটটার দিকে গোপন কক্ষে ভোট দিতে ঢোকেন। ২০ মিনিট চলে যায়। কিন্তু তিনি বের হচ্ছিলেন না। পরে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা লীনা দত্ত ওই নারীকে বলেন, ‘আপনি সঠিকভাবে চাপুন।’ কিন্তু সাজিদা আর সঠিকভাবে চাপতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে লীনা দত্ত ওই নারী উদ্দশ্যে করে বলেন, ‘উল্টাপাল্টা টিপে মেশিনই নষ্ট করে ফেলেছেন।’
আজ শনিবার সকাল থেকে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ চলছে। নগরের আলমগীর মনসুর মিন্টু মেমোরিয়াল কলেজ ভোটকেন্দ্রে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়।
পরে লীনা দত্ত কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে ফোনে বিষয়টি জানান। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র দাস ওই বুথে এসে মেশিন ঠিক করেন। এর পর কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা একজন নারী আনসার সদস্যের সহযোগিতায় ভোট দেন সাজিদা খাতুন। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ নগরের মালগুদাম এলাকায়।
আজ সকালে কেন্দ্রটির একাধিক বুথে ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে অনেক নারী এমন বিড়ম্বনায় পড়েছেন। ফলে ভোট দিতে সময় লাগছে বেশি। সাজিদা বেগমের ভোট দেওয়া শেষ হলে ৭০ বছর বয়সী মিলন রানী মণ্ডল ভোট দিতে যান গোপন কক্ষে।
আলমগীর মনসুর মিন্টু মেমোরিয়াল ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডং কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমাদের ওপর নির্দেশনা আছে, যদি কেউ ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে না পারেন, সে ক্ষেত্রে ওই ভোটারের সঙ্গে আসা কোনো স্বজন তাঁকে সহযোগিতা করবেন। কিন্তু সাজিদা বেগমের সঙ্গে তাঁর কোনো স্বজন না আসায় এক নারী আনসার সদস্য তাঁকে ভোট দিতে সহযোগিতা করেছেন।’
এই কেন্দ্রে মোট পুরুষ ভোটার ২ হাজার ৩৫৪ জন। আর নারী ভোটার ২ হাজার ৯৬ জন। আজ আটটা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নগরের আলমগীর মনসুর মিন্টু মেমোরিয়াল কলেজ, এডওয়ার্ড স্কুল ও ময়মনসিংহ মহিলা কলেজ কেন্দ্রে দেখা যায়, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গিয়ে অনেকেই বিড়ম্বনায় পড়েন। তবে কেউ কেউ খুব সজহেই ভোট দিতে পারছেন।
এডওয়ার্ড স্কুল কেন্দ্রে নবীন ভোটার মারিশা আক্তারকে অল্প সময়ের মধ্যেই ভোট দিয়ে কক্ষ থেকে বের হতে দেখা যায়। ভোট দেওয়া শেষে তিনি বলেন, ‘আমি এর আগে সংসদ নির্বাচনে প্রথম ভোট দিই। সেটি ছিল ব্যালটে। আজ প্রথম ইভিএমে ভোট দিয়েছি। খুব সহজ এবং আধুনিক মনে হলো।’
এডওয়ার্ড কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শাজাহান সাজু বলেন, ‘ভোটারদের পাশাপাশি অনেক কর্মকর্তাও ইভিএমে অতটা অভ্যস্ত হয়ে ওঠেননি। যে কারণে সময় বেশি লাগছে।’
সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর সকাল ১০টা পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ইকরামুল হক (টেবিল ঘড়ি), সাদেকুল হক খান (হাতি), এহতেসামুল আলম (ঘোড়া), রেজাউল হক (হরিণ) ও জাতীয় পার্টির মনোনীত শহিদুল ইসলাম (লাঙ্গল)। এ ছাড়া ৩৩টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৪৯ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ৬৯ জন প্রার্থী।