গোপালগঞ্জের মালিবাতা সেবাশ্রমের পূজারির লাশ উদ্ধারের পর পুলিশকে ঘটনা খুলে বলছেন আশ্রমের লোকজনসহ এলাকাবাসী। রোববার সকালে
গোপালগঞ্জের মালিবাতা সেবাশ্রমের পূজারির লাশ উদ্ধারের পর পুলিশকে ঘটনা খুলে বলছেন আশ্রমের লোকজনসহ এলাকাবাসী। রোববার সকালে

সেবাশ্রমে পড়ে ছিল পূজারির হাত-মুখ বাঁধা লাশ, দানবাক্স ভাঙা

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মালিবাতা সেবাশ্রম থেকে হাসিলতা বিশ্বাস (৭০) নামের এক বৃদ্ধা পূজারির হাত-মুখ বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সকালে আশ্রম থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় ওই পূজারির ঘরের আলমারি ও আশ্রমের দানবাক্স ভাঙা ছিল।

পুলিশ ও সেবাশ্রম-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, চুরি করতে এসে গতকাল শনিবার রাতের কোনো একসময়ে দুর্বৃত্তরা ওই পূজারিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। নিহত হাসিলতা সদর উপজেলার নিজড়া ইউনিয়নের দোয়ানীবাড়ী গ্রামের মৃত দিপীন বিশ্বাসের স্ত্রী। ১০ বছর ধরে তিনি মালিবাতা সেবাশ্রমে পূজা-অর্চনা করে আসছিলেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, গতকাল দিবাগত রাতে আশ্রমে নিজের কক্ষে একাই ঘুমিয়ে ছিলেন হাসিলতা বিশ্বাস। আজ ভোরে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা আশ্রমে গিয়ে মন্দিরের দরজা খোলা দেখতে পান। তাঁরা ভেতরে গিয়ে আশ্রমের পূজারি হাসিলতা বিশ্বাসের হাত-মুখ বাঁধা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওসি আনিচুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে চুরি করার জন্য বৃদ্ধাকে হত্যা করা হতে পারে। বৃদ্ধার ঘরের আলমারি ও আশ্রমের দানবাক্সও ভাঙা ছিল। বিষয়টি শুধু পুলিশ নয়, বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করছে। দ্রুত জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

মালিবাতা সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক গৌতম পাণ্ডে বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, বেশ কয়েকজন দুর্বৃত্ত হয়তো মন্দিরে ঢুকেছিল। গামছা দিয়ে তাঁর (হাসিলতা) মুখ ও হাত বেঁধেছিল। তাঁকে হয়তো শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। আশ্রমে আগেও বেশ কয়েকবার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এবারও হয়তো চুরির উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তরা মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করেছিল।’

গোপালগঞ্জ জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দুলাল বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনা শোনার পরপরই তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে যান। মন্দিরে চুরির পর পূজারিকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দ্রুত দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনবেন বলে তিনি আশা করেন।