সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজে আছেন নোয়াখালীর আনোয়ারুল হক
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজে আছেন নোয়াখালীর আনোয়ারুল হক

‘খুদে বার্তায় ছেলে জানিয়েছে, জাহাজটি দস্যুরা সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে’

‘আমার ছেলের মতো আরও ২২ ছেলে আবদ্ধ হয়ে আছে, তাদের মা-বাবা তাদের জন্য অস্থির হয়ে আছে। সরকারের কাছে আমার একটাই অনুরোধ, আমাদের ছেলেদের যেন মায়েদের কাছে নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে।’ ভারত মহাসগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ারুল হকসহ ২৩ বাংলাদেশিকে উদ্ধারে এভাবেই আকুতি জানান মা দৌলত আরা বেগম।

বাবা আজিজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ছেলের সঙ্গে সর্বশেষ যখন কথা হয়, তখন জানিয়েছিলেন তাঁদের সবাইকে জাহাজের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়েছে। পরে খুদে বার্তায় জানিয়েছেন, ভোররাতে জিম্মি সবাইকে সাহ্‌রি খাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। জাহাজটি দস্যুরা সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

ছেলে জিম্মি হওয়ার পর থেকে মায়ের কান্না থামাতে পারছেন না আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া–প্রতিবেশীরা। তিনি জায়নামাজে বসে সন্তানকে ফিরে পেতে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছেন। আনোয়ারুলের মা দৌলত আরা বেগম বলেন, ‘প্রতিদিন সন্ধ্যায় নিয়ম করে ছেলে ফোনে আমার সঙ্গে কথা বলে। সেই ছেলের সঙ্গে কথা হচ্ছে না। আজ ভোরে ছেলে মেসেজ পাঠিয়ে জানিয়েছে, তাদের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়েছে। সবার কাছ থেকে মুঠোফোন নিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের একটি দল আকস্মিকভাবে ঘিরে ফেলে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। একপর্যায়ে জলদস্যুরা বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টার দিকে জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই যাচ্ছিল। এতে নাবিকসহ ২৩ বাংলাদেশি আছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে আনোয়ারুল হক দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট। প্রায় সাত বছর ধরে তিনি জাহাজে চাকরি করছেন। সর্বশেষ গত জুলাই মাসে দেশে এসেছিলেন। প্রায় তিন মাস থাকার পর আবার জাহাজে ফিরে যান।