চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মিলি আক্তারের (২০) ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপকারীর বিচারের দাবিতে এলাকায় মানববন্ধন হয়েছে। আজ রোববার দুপুর ১২টায় উপজেলার সুজাতপুর বাজার এলাকায় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও মতলব উত্তর উপজেলার বন্ধুসভার সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে স্থানীয় লোকজন অংশ নেন।
গৃহবধূর পরিবার ও থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, প্রেসক্লাব কার্যালয়ের সামনে মতলব-শ্রীরায়েরচর সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় তিন শতাধিক মানুষ অংশ নেন। বক্তব্য দেন মতলব সরকারি কলেজের প্রভাষক কামাল হোসেন, মতলব উত্তর প্রেসক্লাবের সভাপতি এ কে এম গোলাম নবী, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, স্থানীয় যুবলীগ নেতা মো. আল-আমিন, গৃহবধূ মিলির বাবা আইয়ুব আলী ও স্বজন আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর মতলব দক্ষিণ প্রতিনিধি মুহাম্মদ জাকির হোসেন, বন্ধুসভার সদস্য কামরুজ্জামান, সমির ভট্টাচার্য, শেখ সরকার, নাজমুল হোসেন, সুমন আহম্মেদ, কামরুল হাসান ও তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ঘটনার পর থেকে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মিলি আক্তার ঢাকার হাসপাতালে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। তাঁর পেটের সন্তানও ঝুঁকিতে। ইতিমধ্যে মিলির একটি পা ও চোখ অবশ হয়ে গেছে। অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গেছে। অ্যাসিড–সন্ত্রাসের শিকার হন মিলির মা রাশেদা বেগমও। তিনিও ঢাকার ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এটি একটি নিষ্ঠুর অপরাধ। এ ঘটনায় মিলির বাবার করা মামলার প্রধান আসামি শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই আসামিকে দ্রুত রিমান্ডে এনে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি জানান তাঁরা। মামলার অপর আসামি মো. বাদলকে বিদেশ থেকে ফেরত এনে আইনের আওতায় আনার দাবি করেন বক্তারা।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বসতঘরের দরজা খোলামাত্র গৃহবধূ মিলি ও তাঁর মা রাশেদা বেগমের ওপর দুর্বৃত্তরা অ্যাসিড ছুড়ে পালিয়ে যায়। অ্যাসিডে মিলির মুখ, বুক, পিঠ, ডান হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। তাঁর মা রাশেদা বেগমের ডান হাত, বুক ও পা ঝলসে যায়। এ সময় তাঁদের চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী সেখানে আসেন। গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনেরা তাঁদের সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখান থেকে ওই রাতে মিলি ও তাঁর মাকে স্বজনেরা ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন।
মতলব উত্তর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, কারাগারে থাকা আসামি শফিকুল ইসলামকে আদালতে এনে শিগগিরই রিমান্ড চাওয়া হবে। অপর আসামি বিদেশ থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না।