কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় জমি–সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ৫ আগস্ট খুন হন খোরশেদ আলম (৫৫) নামের এক কৃষক। স্বজনদের দাবি, দেশের অস্থিতিশীল অবস্থায় ওই সময় কোনো ধরনের পুলিশি সহায়তা পায়নি তাঁরা। ফলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহটি দাফন করতে হয়েছিল। তবে এর প্রায় চার মাস পর আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল শুক্রবার মরদেহটি কবর থেকে তোলা হয়েছে।
খোরশেদ আলম উপজেলা বেলঘর উত্তর ইউনিয়নের পালপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৯ আগস্ট কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৯ নম্বর আমলি আদালতে চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন তাঁর ছেলে ইমরান হোসেন।
আদালতের নির্দেশে ২২ অক্টোবর লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামলাটিকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করেন। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতপরিচয়ে ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন পালপাড়া গ্রামের সাব্বির আহমেদ (৫৫) ও তাঁর ছেলে ফাহিম (২৮), সালাউদ্দিন (৩৩) ও আলমগীর হোসেন (২৪)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লালমাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত সিরাজী বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল নূর আশেকের উপস্থিতিতে গতকাল সন্ধ্যায় মরদেহটি তোলা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির পরিবার ও মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, খোরশেদ ও তাঁর ভাই জসিম উদ্দিনের সঙ্গে জমি বিক্রয় নিয়ে একই গ্রামের সাব্বির আহমেদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশব্যাপী অস্থিতিশীলতার সুযোগে ওই দিন বিকেলে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে খোরশেদ ও জসিমের ওপর হামলা করেন সাব্বির আহমেদ ও তাঁর সঙ্গীরা। একপর্যায়ে খোরশেদকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
খোরশেদের ছেলে ও মামলার বাদী ইমরান হোসেন দাবি করেন, ‘হত্যাকারীরা প্রকাশ্যেই এলাকায় ঘুরছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাদের হুমকি দিচ্ছে। দ্রুত তাঁদের গ্রেপ্তার করা হোক। আমরা খুনিদের ফাঁসি চাই।’
অন্যদিকে এক আসামিকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। এ প্রসঙ্গে লালমাই থানার এসআই শাহাদাত সিরাজী বলেন, ‘এ মামলার ৩ নম্বর আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যরা পলাতক। তাঁদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’