ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ‘মাহাতো’দের ভাষা ও সংস্কৃতিচর্চার জন্য সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় চালু হয়েছে কুড়মালি পাঠশালা। আজ শনিবার বেলা ১০টার দিকে উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম আটঘরিয়া গ্রামে স্থাপিত পাঠশালার উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল হোসেন তালুকদার।
মাহাতো সম্প্রদায়ের মাতৃভাষা কুড়মালি। অন্য অনেক ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ভাষার মতো কুড়মালিও হারিয়ে যেতে বসেছে। নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে ‘গিদরাগিলাক কুড়মালি পড়হাও, নেগাচার শিখাও’ (ছেলেমেয়েদের কুড়মালি পড়াও, সংস্কৃতি শেখাও) প্রতিপাদ্যে পাঠশালাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে মাহাতো শিশুদের কুড়মালি ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে ৫০ জন শিশু নিয়ে এ পাঠশালার কার্যক্রম চলবে। সপ্তাহে দুই দিন সেখানে পাঠদান করা হবে।
পাঠশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান মো. রিফাত-উর-রহমান। তিনি আয়োজকদের এমন উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার জন্য নিজেদের উদ্যোগী হতে হবে। এ কাজ প্রতিটি ঘর থেকে শুরু করতে হবে। নিজেদের সারা দেশে সারা বিশ্বে পরিচিত করতে শিক্ষার বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আজকের এ পাঠশালা একদিন চারদিকে আলোয় ভরিয়ে দেবে। এ জন্য যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কুড়মালি ভাষার লেখক ও গবেষক উজ্জল মাহাতো। বক্তব্য দেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক বরুণ চন্দ্র রায়, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মানুষের জন্য আমরার সাধারণ সম্পাদক ও নিমগাছী কলেজের সহকারী অধ্যাপক যোগেন্দ্রনাথ সরকার, তাড়াশ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও জিন্দানি ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক সনাতন দাশ, রঘুনিলি মঙ্গলবাড়িয়া বিজ্ঞান কারিগরি ও কৃষিপ্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক এম আতিকুল ইসলাম, শিক্ষক ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সদস্য সুশীল কুমার মাহাতো প্রমুখ।
পরে ইন্ডিজেনাস সোসাইটি অ্যান্ড কালচার বাংলাদেশের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় বিভিন্ন বয়সী শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।