বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল বলেছেন, ‘আমারা চূড়ান্ত লড়াইয়ে এখনো বিজয়ী হতে পারিনি। আওয়ামী লীগের নোংরা চরিত্র বিশ্ববাসীর কাছে উন্মোচন করতে ব্যর্থ হলে আগামী ২০ বছর পর আরেকটি অভ্যুত্থানের প্রয়োজন হবে। এটি হতে দিতে পারি না। আমরা আমাদের সন্তনেরা আবারও রক্ত দিক, সেটি চাই না।’
সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘ছাত্র-জনতার সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আজ সোমবার বিকেলে সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় এবং সিলেটের সমন্বয়ক ও ছাত্র প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
ফ্যাসিবাদকে বিদায় দিতে চাইলে বিপ্লবীদের খুবই সতর্ক থাকতে হবে উল্লেখ করে সমাবেশে আরিফ সোহেল আরও বলেন, ‘২০২৪–এর গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন কিছু চিন্তাভাবনা হাজির হয়েছে। নতুন কিছু ভাষা হাজির হয়েছে। আমরা ফ্যাসিবাদকে কবর দেওয়ার কথা বলছি, যাতে নতুন করে আর কখনো জীবিত হতে না পারে। আমরা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলছি। এ রাজনৈতিক ব্যবস্থা এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা, যাতে ফ্যাসিবাদ টিকতে পারবে না। ফ্যাসিবাদের অক্সিজেন এ রাজনৈতিক ব্যবস্থায় থাকবে না।’
১৯৭২ সালে একটি সুনির্দিষ্ট দেশের প্রেসক্রিপশনে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছিল মন্তব্য করে আরিফ সোহেল আরও বলেন, ‘২০২৪ সালে যে লড়াই হয়েছে, এতে দেশের মানুষের যে আশা ও আকাঙ্ক্ষা দেখা দিয়েছে, সেটিই হবে আমাদের দেশের সংবিধান। যেখানে ক্ষমতার জন্য চার বছর কিংবা পাঁচ বছর পরপর খুনোখুনি থাকবে না; যেখানে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে পারব। তেমনটি চাইলে সবাইকে সংগঠিত হতে হবে।’
সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ, সমন্বয়ক মাহিন সরকার, রিফাত রশিদ, তালাত মাহমুদ, রফিকুল ইসলাম, বেলাল আহমদ, সিলেটের সমন্বয়ক মালেকা খাতুন প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিবাদী কাঠামো ভেঙে দিতে চাইলে সংবিধান সংস্কার করলেই চলবে না। সংবিধান নতুন করে লিখতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণভোটের আহ্বান করুক। গণভোট নিয়ে মানুষের জন–আকাঙ্ক্ষা কী? চাহিদা কী? টান কোন দিকে? সেটি বুঝতে চেষ্টা করুক। সে অনুযায়ী নতুন করে সংবিধান লেখার উদ্যোগ গ্রহণ করুক। ছাত্র-জনতা এর সমর্থনে কাজ করবে। শুধু ক্ষমতার জন্য, নির্বাচনের জন্য গণ-অভ্যুত্থান হয়নি। দুর্নীতি, ফ্যাসিবাদ, চাঁদাবাজ, লুটরাজ বাংলার জমিন থেকে মুক্ত করতে হবে। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সমাবেশে সিলেটের সমন্বয়ক ফয়সল হোসেনের সঞ্চালনায় সমাপনী বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব। এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে ছাত্র-আন্দোলনে নিহত ও আহতদের স্মরণ করেন বক্তারা। পরে দেশাত্মবোধক গানের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়।