নরসিংদীতে বিদ্যুৎ মিলছে চাহিদার অর্ধেক, কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত

লোডশেডিং
প্রতীকী ছবি

নরসিংদী জেলায় যে পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে, তিন দিন ধরে তার অর্ধেক পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে জেলার প্রতিটি এলাকায় দফায় দফায় লোডশেডিং চলছে। এর প্রভাবে শিল্পকারখানায় উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। দিনের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় দৈনন্দিন কাজ করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ।

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে মহেশখালীতে ভাসমান দুটি টার্মিনাল থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে এসেছে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের একটি বড় অঞ্চলে লোডশেডিং চলছে।

নরসিংদী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২–এর আওতায় নরসিংদী শহরসহ পাঁচটি উপজেলা ও কিশোরগঞ্জের তিনটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২–এর সহকারী মহাব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, এসব এলাকায় বিদ্যুতের মোট চাহিদা ২১০ মেগাওয়াট। গত সপ্তাহের সোমবার (৮ মে) বিদ্যুতের সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল, পাওয়া গিয়েছিল গড়ে ১৮০ থেকে ১৯০ মেগাওয়াট। তবে গত তিন দিন বিদ্যুতের সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ মেগাওয়াট। এ কারণে গড়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।

সহকারী মহাব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চাহিদার তুলনায় ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছি। এ কারণে গত তিন দিনে বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ লোডশেডিং করতে হয়েছে। শিল্প এলাকা হওয়ায় ও এসএসসি পরীক্ষা চলমান থাকায় হয়তো কোথাও একটু কমবেশি হতে পারে, কিন্তু ভারসাম্য রক্ষা করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তর ও হাসপাতালের মতো সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানগুলোয় সহনীয় মাত্রায় লোডশেডিং করতে গিয়েও কোথাও কমবেশি হতে পারে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে লোডশেডিং হওয়ায় প্রায় প্রতিটি কারখানার উৎপাদন কমে গেছে। তবে বেশ কিছু কারখানায় জেনারেটরের মাধ্যমে উৎপাদন চালু রাখলেও তাদের খরচ বেড়েছে। এ ছাড়া গ্যাস না থাকায় পাঁচ দিন ধরে জেলার ৫০ শতাংশের মতো কারখানা বন্ধ হয়ে আছে। এ অবস্থা কবে স্বাভাবিক হবে, এ নিয়ে চিন্তিত তারা।

জানতে চাইলে নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, তিন দিন ধরে ব্যাপক লোডশেডিং ও পাঁচ দিন ধরে অনেক কারখানায় গ্যাস না থাকায় ৭০ শতাংশের মতো উৎপাদন কমেছে। বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছেন, এসব সমস্যার সমাধান হতে আরও সপ্তাহখানেক লাগবে। তিনি আরও বলেন, ‘১২ টাকার গ্যাস ৩০ টাকায় কিনেও যদি না পাওয়া যায়, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি কিছু হতে পারে?’