খুনিদের পোস্টার-ফেস্টুনে শহর ছেয়ে আছে: রফিউর রাব্বি

ত্বকী হত্যায় চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার শুরু করার দাবি জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট বুধবার সন্ধ্যায় নগরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তন প্রাঙ্গণে মোমশিখা প্রজ্বালন পালন করে
ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৩৪ মাস উপলক্ষে মোমশিখা প্রজ্বালন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে রফিউর রাব্বি বলেন, ত্বকীর খুনিদের পোস্টার-ফেস্টুনে শহর ছেয়ে আছে। সরকার বারবার এ খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নাম আসার পরও ত্বকীর খুনিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় নগরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট এ আয়োজন করে।

সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান, সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক, সিপিবি শহর কমিটির সভাপতি আবদুল হাই, বাসদের জেলা সংগঠক সেলিম মাহমুদ, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক তরিকুল সুজন, সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা প্রমুখ।

রফিউর রাব্বি বলেন, যেখানে আইনের শাসন নেই, বিচারব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ, দুর্বৃত্তরা সর্বশক্তিমান—সেখানে স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠা হওয়াই নিয়ম। সরকার মানুষের প্রতি মুখ ফিরিয়ে দুর্বৃত্ত গডফাদারদের ওপর নির্ভরশীল হয়েছে। এই দুর্বৃত্তরা যখন হত্যাকারী হয়, তখন সরকার বিচার করতে পারে না। আর সে জন্যই সরকারকে ত্বকী, সাগর-রুনি, তনু হত্যার বিচার বন্ধ করে রাখতে হয়।

মাহাবুবুর রহমান বলেন, ত্বকীকে কারা হত্যা করেছে, তা নারায়ণগঞ্জবাসীসহ সারা দেশের মানুষ জানেন। মানুষ আজকে দেশে ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ত্বকী হত্যার বিচার চাচ্ছেন। তাঁদের আশা, সরকার মানুষের এ দাবি ও প্রতিবাদের ভাষাকে বুঝবে। সব হত্যার বিচার নিশ্চিত করবে।

২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় ত্বকী। দুদিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজও আদালতে পেশ করা হয়নি। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।