শিক্ষকতা থেকে অবসরে গিয়ে আশরাফ হাওলাদার (৮০) ও তাঁর স্ত্রী লাইলী বেগম (৭৫) বাস করছেন নিজ বাড়িতে। আজ বুধবার বিকেলে সেই বাড়ি থেকে এই বৃদ্ধ দম্পতির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের বহালগাছিয়া গ্রামে। তবে এই দম্পত্তি কীভাবে মারা গেলেন, কেন মারা গেলেন, তা এখনো জানতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, আশরাফ জেলার কলাপাড়া উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। প্রায় ২০ বছর আগে তিনি শিক্ষকতা থেকে অবসরে গিয়ে বহালগাছিয়া এলাকায় নিজ বাড়িতে ওঠেন। বাড়ির প্রবেশপথে লোহার গেট। চারদিকে পাকা সীমানাপ্রাচীর দিয়েছেন তিনি। তবে ভেতরে একটি টিনের ঘরে এই দম্পতি বসবাস করছিলেন। এই দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলে আবদুল্লাহ হিমু ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে বলে আশরাফের চাচাতো ভাই মিজানুর রহমান জানিয়েছেন।
মিজানুর রহমান বলেন, এই দম্পতির এলাকায় তেমন ওঠাবসা নেই। আশরাফ ডায়াবেটিক রোগী। প্রতিদিনই তিনি এলাকায় হাঁটতে বের হতেন এবং নিয়মিত মসজিদে যেতেন। মাঝেমধ্যে তাঁর ছেলে ও মেয়েরা আসতেন এবং মা–বাবার খোঁজ নিতেন। বাসায় অন্য কোনো লোক থাকতেন না।
এদিকে মা–বাবার সঙ্গে মুঠোফোনে অনেক চেষ্টা করে না পেয়ে আজ ছেলে আবদুল্লাহ বাড়ির পাশে দোকানদার রফিক গাজীকে মা–বাবার খোঁজ নিয়ে জানাতে বলেন।
রফিক গাজী বলেন, আবদুল্লাহ মুঠোফোনে খোঁজ নেওয়ার কথা বললে এলাকার একজনকে নিয়ে বিকেল চারটায় আশরাফের বাড়িতে প্রবেশ করার চেষ্টা করি। কিন্তু প্রধান ফটক তালাবদ্ধ থাকায় সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে প্রবেশ করে ঘরের দরজা খোলা দেখতে পাওয়া যায়। একটু কাছে যেতেই দুর্গন্ধ আসতে থাকে। এ সময় ঘরের খাটে আশরাফের স্ত্রী ও মেঝেতে আশরাফের লাশ পড়ে থাকা অবস্থায় দেখা যায়। তাৎক্ষণিক খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে চলে আসে এবং তাঁদের লাশ উদ্ধার করে।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসীম প্রথম আলোকে বলেন, লাশ দুটি অর্ধগলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। বাড়িতে ওই দম্পতি থাকতেন। কীভাবে মারা গেলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।