ঈদযাত্রায় ঘরমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে। আজ শনিবার সকালে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ৩ নম্বর ঘাট এলাকায়
ঈদযাত্রায় ঘরমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে। আজ শনিবার সকালে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ৩ নম্বর ঘাট এলাকায়

ঈদযাত্রায় ঘরমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে পাটুরিয়া ঘাটে

ঈদযাত্রায় মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঘরমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে পাটুরিয়ার ফেরি ও লঞ্চঘাটে যাত্রীদের ভিড় চোখে পড়ে। ঘরমুখী যাত্রীদের অধিকাংশই ঢাকা, গাজীপুর ও এর আশপাশের বিভিন্ন এলাকার পোশাক কারখানার শ্রমিক।

যাত্রীরা ঢাকা, গাজীপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকাল বাসে করে পাটুরিয়া ঘাটে আসছেন। ঘাটে আসার কিছুক্ষণ পর তাঁরা ফেরি ও লঞ্চে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌপথ পার হয়ে যাচ্ছেন। ফেরিঘাটে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসের চাপ কিছুটা বেড়েছে, তবে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না। ঘাটে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসগুলো ফেরিতে ওঠার সুযোগ পাচ্ছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার থেকে ঈদযাত্রা শুরু হলেও পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল না। তবে পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ার পর গতকাল শুক্রবার দুপুরের পর থেকে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কিছুটা বেড়ে যায়। এসব যানবাহনের অধিকাংশই লোকাল বাস। যাত্রীদের ঘাট এলাকায় নামিয়ে দিয়ে বাসগুলো আবার ঢাকার দিকে চলে যাচ্ছে। এবারের ঈদযাত্রায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ১৭টি ফেরি ও আরিচা-কাজীরহাট নৌপথে ৫টি ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।

আজ সকালে পাটুরিয়া ঘাটে গিয়ে ঘরমুখী মানুষের ভিড় দেখা যায়। লোকাল বাসে করে পাটুরিয়া পুরোনো ট্রাক টার্মিনালে আসছেন যাত্রীরা। এরপর হেঁটে তাঁরা লঞ্চঘাটে যাচ্ছেন। সেখানে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষার পর তাঁরা লঞ্চে উঠছেন। অনেক যাত্রীকে ফেরিতে উঠতেও দেখা যায়। তবে দূরপাল্লার বাস ও যাত্রীর চাপ তুলনামূলক কম। প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলে করেও ঘরমুখী মানুষকে বাড়ি ফিরতে দেখা যাচ্ছে।

ঢাকার সাভারে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন আতাউর রহমান। তিনি স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশায় ঈদ করতে যাচ্ছেন। আজ সকাল ১০টার দিকে ৩ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, বৃদ্ধ মা–বাবা ও ভাইবোন বাড়িতে আছেন। তাঁদের সঙ্গে ঈদ করতে পরিবার নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে নবীনগর এলাকায় কিছুক্ষণ আটকে থাকতে হয়। তা ছাড়া মহাসড়কের কোথাও আটকে থাকতে হয়নি। ঘাটেও আগের চেয়ে ভোগান্তি কমেছে।
আজ বেলা ১১টার দিকে পাটুরিয়ার ৩ নম্বর ঘাটে ২৫ থেকে ২০টি যাত্রীবাহী বাসের সারি দেখা যায়। পরে এসব বাস আধা ঘণ্টার মধ্যে ফেরিতে উঠে যায়।

ঈদযাত্রায় ভিড় বেড়েছে পাটুরিয়া ঘাটে। আজ শনিবার সকালে পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ৩ নম্বর ঘাট এলাকায়

পাটুরিয়ার ৩ নম্বর ঘাট এলাকায় কথা হয় গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি বাসের যাত্রী রাকিব হোসেনের সঙ্গে। তিনি ঢাকার সাভারে ব্যবসা করেন। রাকিব বলেন, স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা সদরে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। আগে ঈদে এই ঘাট এলাকায় তাঁর ৫ থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত যানজটে আটকে থাকার অভিজ্ঞতা আছে। তবে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে পাটুরিয়ায় সেই ভোগান্তি নেই। ঘাটে আসার আধা ঘণ্টার মধ্যেই বাস ফেরিতে ওঠায় সুযোগ পায়।

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সকাল থেকে ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কিছুটা বেড়েছে। তবে আজ সকালে যাত্রীর চাপ বেশি। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত এ চাপ থাকতে পারে। পর্যাপ্ত ফেরি থাকায় ভোগান্তি ছাড়াই যাত্রীরা নদী পার হচ্ছেন।