নির্যাতনের শিকার হয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি লেখা কিশোরীর অবস্থার উন্নতি

রাজশাহী জেলার মানচিত্র
রাজশাহী জেলার মানচিত্র

রাজশাহীতে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতাল থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি লিখে আশ্রয় চাওয়া কিশোরীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। সে আগের চেয়ে স্বাভাবিকভাবে কথা বলছে। সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে সে দাবি করেছে, তাকে একাধিকবার ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। সে আর গৃহকর্তার বাড়িতে যেতে চায় না। এ পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।

রাজশাহী সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক হাসিনা মমতাজ বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতালে কর্মরত সমাজসেবা কর্মকর্তা মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেছেন। মেয়েটি তাঁদের বলেছেন, গৃহকর্তা তাকে একাধিকবার ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন। সে কিছুতেই আর ওই বাড়িতে ফিরে যাবে না। উপপরিচালক জানান, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। মামলা ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) থেকে করা হবে, না কি সমাজসেবা অধিদপ্তর করবে, এসব বিষয়ে আগামীকাল শনিবার সিদ্ধান্ত হবে। তবে মেয়েটি সমাজসেবা অধিদপ্তরের সেফ হোমে থাকতে পারবে।

এই কিশোরীর বাড়ি নওগাঁয়। ১০ বছর আগে তার বাবা ও মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে। এরপর তাঁরা আবার অন্য জায়গায় বিয়ে করেছেন। মা–বাবার কেউ এই কিশোরীকে তাঁদের সঙ্গে নেন না। অনেক দিন নানির বাড়িতেই থেকেছে সে। গত বছরের ১২ আগস্ট রাজশাহী নগরের এক বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজে রেখে যান তার এক আত্মীয়। এই গৃহকর্তার বিরুদ্ধেই যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনেছে ওই কিশোরী। সে বাসায় একজন নার্স ভাড়া থাকতেন। তিনিই নির্যাতিত এই কিশোরীকে উদ্ধার করে গত ৫ জানুয়ারি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে দেন। এরপর গৃহকর্তা তাকে বাসায় আনার চেষ্টা করেন।

গৃহকর্তাকে দেখলেই মেয়েটি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। সে কিছুতেই তাঁর সঙ্গে যেতে চায়নি। বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিলে গত সোমবার সে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের যুববিষয়ক ক্লাবের এক সদস্যের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কাছে আশ্রয় চেয়ে চিঠি লেখে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা পেয়ে শিশুবিষয়ক পুলিশ ও সমাজসেবার প্রবেশন কর্মকর্তা হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটিকে ওসিসিতে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। ওসিসিতে ভর্তির সময় চিকিৎসক তাঁর মতামতের ঘরে লিখেছেন ‘রিপিটেড সেক্সুয়াল অ্যাসল্ট।’