রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর রাজনৈতিক কার্যালয়ের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার হওয়া অর্ধগলিত লাশটির পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির পকেটে মানিব্যাগে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের সূত্র ধরে তাঁর পরিচয় জানা যায়। লাশটি নয়নাল উদ্দিন (৬০) নামের আওয়ামী লীগের একজন কর্মীর। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার শ্যামপুর থান্দারপাড়া মহল্লায়।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী নিউমার্কেটের বিপরীতে ফারুক চৌধুরীর কার্যালয়ের পাশে একটি ম্যানহোল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। একই সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে ওমর ফারুক চৌধুরীর মালিকানাধীন ১০ তলা থিম ওমর প্লাজার ১ তলায় রাজনৈতিক কার্যালয়।
থিম ওমর প্লাজা ও রাজনৈতিক কার্যালয়ের মাঝামাঝি স্থানে পেছন দিকের সীমানাপ্রাচীর-সংলগ্ন ছোট একটি ম্যানহোল। থিম ওমর প্লাজার প্রথম থেকে সপ্তম তলা পর্যন্ত শপিংমল। আর সপ্তম থেকে দশম তলা পর্যন্ত অ্যাপার্টমেন্ট। ভবনের ১০ তলার একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন ফারুক চৌধুরী। ভবনের কয়েক ফুট পূর্বে ওমর ফারুক চৌধুরীর রাজনৈতিক কার্যালয়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে নিহত নয়নাল উদ্দিনের বোন কুলসুম বেগম তাঁর লাশ শনাক্ত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নয়নালের স্ত্রী-সন্তান নেই। ভবঘুরে প্রকৃতির লোক। আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। দিনের বেশির ভাগ সময় আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ নেতাদের সঙ্গে থাকতেন। এ ঘটনায় তিনি অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে বোয়ালিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান বলেন, নয়নাল আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। কোনো কাজকর্ম করতেন না। ১০-১২ বছর ধরে প্রতি মাসে এক-দুবার এসে তাঁর কাছ থেকে হাতখরচ নিয়ে যেতেন। তাঁর মতো নিরীহ মানুষকে কে মারতে যাবেন কিংবা তাঁর লাশ কীভাবে ম্যানহোলে গেল, তিনি কিছুই বুঝতে পারছেন না।
থানা–পুলিশের পাশাপাশি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা নানা আলামত সংগ্রহ করেন।
থিম ওমর প্লাজার সিকিউরিটি ইনচার্জ জুবায়ের হোসেন বলেন, প্রতিদিন সকালে নিরাপত্তাপ্রহরীরা চারপাশ ঘুরে দেখেন। সকালে রোম্মান নামের একজন নিরাপত্তাপ্রহরী রাজনৈতিক কার্যালয়-সংলগ্ন শৌচাগারের ম্যানহোলের ভেতরে লাশটি পড়ে থাকতে দেখেন। লাশ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ম্যানহোলের ঢাকনা অর্ধেকটা খোলা ছিল। তিনি ওই ফাঁক দিয়ে পড়ে গেছেন নাকি কেউ তাঁকে হত্যা করে ফেলে রেখেছেন, বলা যাচ্ছে না। এখনো ময়নাতদন্ত শেষ হয়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসা যাবে। নিহত নয়নাল উদ্দিনের বোন কুলসুম বেগম থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যার অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় তদন্ত করছে পুলিশ।