সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী চলন্ত ট্রেন উদয়ন এক্সপ্রেসে তরুণী ধর্ষণের অভিযোগ তদন্তে গতকাল বুধবার চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা সেই ট্রেনে কর্মরত বেশ কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
সভা শেষে বেলা একটার দিকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, তাঁরা তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছেন। সেদিন উদয়ন এক্সপ্রেসে কর্মরত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে তাঁরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন। এরপর মূল ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে।
উদয়ন এক্সপ্রেস সিলেট থেকে গত মঙ্গলবার রাত ১০টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। চট্টগ্রাম পৌঁছায় বুধবার সকাল আটটায়। তবে বুধবার ভোর সাড়ে চারটায় লাকসাম পার হওয়ার সময় চলন্ত ট্রেনটিতে এক তরুণীকে (১৯) ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ভোরে এই ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি জানাজানি হয় সন্ধ্যার পর। ধর্ষণের ঘটনায় ট্রেনে খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসএ করপোরেশনের চার কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ। পাশাপাশি রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপকের কার্যালয় থেকে এসএ করপোরেশনের কার্যক্রম স্থগিত করার আদেশ জারি করা হয়েছে। একই ঘটনায় ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) আবদুর রহিমকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেলওয়ে।
রেলওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ১৯ বছর বয়সী এক তরুণী উদয়ন এক্সপ্রেসে চট্টগ্রামে আসছিলেন। খাবারের বগিতে অবস্থান করছিলেন ওই তরুণী। চলন্ত ট্রেনে এসএ করপোরেশনের কয়েকজন কর্মী তরুণীকে প্রথমে উত্ত্যক্ত এবং পরে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেছেন। ওই তরুণী আত্মীয়দের সঙ্গে ভৈরবে থাকেন। তাঁর বাড়ি বান্দরবানে। পরে এ ঘটনায় মো. জামাল (২৭), মো. শরীফ (২৮) ও মো. রাশেদ (২৭) নামের তিন কর্মীকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে আজ ভোরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে আবদুর রব ওরফে রাসেল (২৮) নামের আরেক কর্মীকে গ্রেপ্তার করে রেলওয়ে পুলিশ।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চলন্ত ট্রেনের খাবারের বগিতে তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় আবদুর রবকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের কুতুবপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবদুর রব ঘটনার পর পালিয়ে আত্মীয়ের বাসায় লুকিয়ে ছিলেন। তাঁদের সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।