মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারের বেদিতে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুপক্ষকে সামলাতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও হট্টগোল হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজৈর উপজেলা পরিষদ চত্বরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত ১২টা ১ মিনিটে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উপমা ফারিসা। এরপরই রাজৈর থানা-পুলিশের পক্ষ থেকে ফুল দেওয়া হয়। এরপর আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়া হয়। ১২টার ১০ মিনিটের দিকে ওই বেদিতে একসঙ্গে ফুল নিয়ে ওঠেন উপজেলা ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ।
প্রথমে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লার অনুসারী রাজৈর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান ওরফে মুকিম তাঁর অনুসারীদের নিয়ে শহীদ বেদিতে ফুল দিতে ওঠেন। এ সময় তাঁদের বাধা দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শাজাহান খানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম। আগে ফুল দেওয়া নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে প্রথমে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বেদিতে দাঁড়ানো অবস্থায় দুপক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের দুপক্ষের নেতা-কর্মীরাও হট্টগোলে জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে দেখে রাজৈর থানা-পুলিশ দ্রুত দুপক্ষের লোকজনকে সরিয়ে দেয়। এরপর শহীদ মিনারের বাইরে দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
রাজৈর উপজেলার ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বেদিতে ফুল দিতে গেলে এমপি শাজাহান খানের অনুসারী কিছু লোক আমাদের ফুল দিতে বাধা দেয়। আমরা প্রতিবাদ জানালে ওরা আমাদের ধাক্কা দিয়ে বেদি থেকে নামিয়ে দিতে চায়। পরে আমরা চড়াও হই। এখানে আমাদের তো কোনো ভুল নাই। বিনা উসকানিতে ওরা আমাদের সঙ্গে ঝামেলা করতে চেয়েছে।’
পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল মোল্লা বলেন, ‘আমরা আগে শহীদ মিনারে ফুল দিতে উঠি। এ সময় জাহিদ হাসান মুকিম ও তার সঙ্গীরা বাধা দেয়। এ নিয়ে আমাদের হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। বিষয়টি ভুল–বোঝাবুঝি ছাড়া কিছু নয়।’
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার বলেন, ‘ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে শহীদ বেদিতে ফুল আগে দেওয়া নিয়ে তর্কবিতর্ক ও হাতাহাতি শুরু হলে পুলিশ দ্রুত তাদের সরিয়ে দেয়। এরপর আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি শান্ত আছে।’