২০১৬ সাল থেকে নিখোঁজ দুই ভাইয়ের সন্ধানের দাবিতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। আজ বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নের পারদিলালপুর গ্রামে
২০১৬ সাল থেকে নিখোঁজ দুই ভাইয়ের সন্ধানের দাবিতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। আজ বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নের পারদিলালপুর গ্রামে

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘তুলে নিয়ে যাওয়া’ দুই ভাইকে ফিরে পেতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে আট বছর আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে ‘তুলে নিয়ে যাওয়ার’ পর থেকে নিখোঁজ দুই ভাইয়ের সন্ধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পরিবারের সদস্যরা। আজ বুধবার দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নের পারদিলালপুর গ্রামে ভুক্তভোগীর বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

২০১৬ সাল থেকে নিখোঁজ ওই দুই ভাই হলেন মিজানুর রহমান ও রেজাউল করিম। সংবাদ সম্মেলনে তাঁদের বাবা আয়নাল হক, ভাই সেতাউর রহমান, মিজানুর রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সেতাউর রহমান জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, তাঁর বড় ভাই মিজানুর রহমান ছিলেন শাহবাজপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য। ছোট ভাই রেজাউল করিম ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে সেতাউর রহমান বলেন, ২০১৬ সালের আগস্টে একদিন তাঁর বাড়ির ছাদে বিএনপির একটি আলোচনা সভা হয়। এ সময় পুলিশ অভিযান চালালে তিনি পালিয়ে যান। পরবর্তী সময় ২০১৬ সালের ১৭ আগস্ট বিকেল পাঁচটার সময় তাঁর বড় ভাই মিজানুর রহমানকে শিবগঞ্জ থানার এসআই মোয়াজ্জেম ও শাহ আলম বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। এ ঘটনা এলাকার সব মানুষই দেখেছেন। কিছুক্ষণ পর শিবগঞ্জ থানায় খোঁজ নিতে গেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রমজান আলী গ্রেপ্তারের বিষয়টি অস্বীকার করেন। মিজানুরকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় জিডি করতে গেলেও ওসি জিডি নেননি। উল্টো যাঁরা জিডি করতে গিয়েছিলেন, তাঁদের নামেও মামলা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ২৭ ডিসেম্বর সেতাউরের ছোট ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রেজাউল করিমকে রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার এলাকার একটি মেস থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ডিবিকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন আয়নাল হক। তখন পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছিলেন, রেজাউলের কোনো দোষ নেই। তাঁর হাতে হাতকড়াও পরানো হয়নি। তাঁকে ছাত্রাবাস থেকে নিয়ে এসেছেন। সেখানে গিয়ে আবার রেখে আসবেন। কিন্তু পরে তাঁকে ছাত্রাবাসে না দিয়ে গোপন করে রাখা হয়। এ ব্যাপারে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি পরিবারের পক্ষ থেকে জিডি করা হয়। পরবর্তীকালে এসপি অফিস, ডিবি অফিস ও থানায় যোগাযোগ করেও তাঁর সন্ধান পাননি পরিবারের সদস্যরা।

সেতাউর রহমান বলেন, ‘আমার দুই ভাইয়ের শোকে আমার মা ব্রেনস্ট্রোকে মারা গেছেন। আমার বাড়িতে সুখ নাই। এখন নতুন সরকার হয়েছে। সেই সঙ্গে অনেক নিখোঁজ ব্যক্তি ফিরে আসছেন। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, আমার দুই ভাইকে আমাদের মাঝে জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ থানার বর্তমান ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মিজানুর রহমানকে বগুড়া থেকে আসা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল ধরে নিয়ে যায়। থানার এসআই কেবল সহায়তা করেছিলেন। ওই দুজন এলাকার একটি হত্যা মামলারও আসামি ছিলেন। প্রাথমিকভাবে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।