ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বাজেবামনদাহ গ্রামের সামাউল ইসলাম এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। তবে তাকে কলেজে পড়ানোর সামর্থ্য তার পরিবারের নেই। তার বাবা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী তাজির উদ্দিন ভ্রাম্যমাণ সবজিবিক্রেতা।
সামাউলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ২ শতাংশ জমির ওপর টিনশেডের একটি ঘরে তাদের বসবাস। দুই ছেলে সামাউল ইসলাম ও সিয়াম হোসেন এবং স্ত্রী সালমা খাতুনকে নিয়ে তাজিরের সংসার। তাজির বলেন, মাঠে তাঁর চাষযোগ্য জমি নেই। এক চোখে তিনি দেখেন না। ভ্যানে করে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তিনি সবজি বিক্রি করেন। এই করে দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়, যা দিয়ে সংসার চলে।
তাজির উদ্দিন বলেন, বড় ছেলে সামাউল পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ছোটবেলা থেকে ছেলে তাঁর সঙ্গে সবজি বিক্রি করেছে, আবার পড়ালেখা করেছে। শিক্ষকেরা ছেলেকে সহযোগিতা করেছেন। ছেলে নিজেও অনেক সময় ছাত্র পড়িয়ে নিজের পড়ার খরচ জোগাড় করেছে।
সামাউল ইসলাম বলল, ‘আমি পড়ালেখা করতে চাই। চিকিৎসক হতে চাই।’ বাবা ঠিকমতো খরচ দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তা থাকলেও যেকোনো উপায়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা তাঁর।
সামাউল ইসলামের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মফিজুর রহমান বলেন, সামাউল অত্যন্ত মেধাবী। তার বাবা ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করে যে আয় করেন, তা দিয়ে ছেলের পড়ালেখার খরচ দেওয়া সম্ভব হয়নি। ছেলেটি নিজের চেষ্টা আর শিক্ষকদের সহযোগিতা এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। সামনে আরও অনেক দিন বাকি আছে, সবার সহযোগিতা ছাড়া সামনের দিনগুলো পাড়ি দেওয়া খুবই কষ্টকর।