যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় গতকাল বুধবার রাতে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেছেন। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তিনি পালিয়ে যান। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ওই ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার নেহালপুর গ্রামের ঝাউতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত ব্যক্তির নাম উজির আলী গাজী (৫০)। আর তাঁর আহত স্ত্রীর নাম পারভিনা খাতুন (৪৫)। মুমূর্ষু অবস্থায় পারভিনাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উজির আলী গাজী মনিরামপুর উপজেলার বালিধা গ্রামের হাতেম আলী গাজীর ছেলে। তিনি ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালাতেন।
পরিবারের বরাত দিয়ে থানা-পুলিশ জানায়, এটা উজির ও পারভিনা দুজনেরই চতুর্থ বিয়ে। পারিবারিক নানা কারণে পারভিনাকে বিয়ের পর উজির আলী গাজী তাঁকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকতেন না। ৯ মাস আগে তাঁরা গ্রাম থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলার নেহালপুর গ্রামের ঝাউতলা এলাকায় বাড়ি ভাড়া নেন। এর পর থেকে তাঁরা সেখানে থাকতেন।
পুলিশ জানায়, গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে উজির আলী গাজীর ভাড়া করা ঘরের মধ্যে চিৎকার-চেঁচামেচি শোনেন আশপাশের লোকজন। তাঁরা গিয়ে দেখেন, ধারালো দা দিয়ে পারভিনাকে গলায় আঘাত করেছেন উজির। এ সময় প্রতিবেশীদের দেখে উজির ঘর থেকে বেরিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন আহত পারভিনাকে উদ্ধার করে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। পরে পারভিনার স্বজনেরা ওই রাতে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তন্ময় বিশ্বাস বলেন, পারভিনা খাতুনের গলার এক পাশের সব রক্তনালি কেটে গেছে। তাঁর কণ্ঠনালির কিছু অংশ কেটে গেছে। সেখানে একটি গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। রাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে পারভিনার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, গতকাল রাতের ঘটনার পর থেকে উজির আলী গাজী পলাতক ছিলেন। আজ সকাল সোয়া আটটার দিকে গ্রামের কয়েকজন তাঁদের ভাড়া করা বাড়ির পাশে একটি শজনে গাছে উজির আলীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। এ সময় তাঁরা পুলিশে খবর দেন। এরপর নেহালপুর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে লাশ উদ্ধার করে।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম মেহেদী মাসুদ বলেন, পারিবারিক কলহের কারণে উজির আলী গাজী গতকাল রাতে দা দিয়ে পারভিনাকে হত্যার চেষ্টা করেন। পরে সকালে উজিরের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।