পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার আন্ধারমানিক নদের মোহনায় আবারও ভেসে এল একটি জীবিত ডলফিন। ডলফিনটি স্টেনেলা অ্যাটেনুয়াটা প্রজাতির বলে জানা গেছে। এর দৈর্ঘ্য ৫ ফিট। ডলফিনটির চোখেমুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ছোট ছোট আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ফজলুল হক সুমন জানান, ‘আজ রোববার বেলা তিনটার দিকে জোয়ারে আন্ধারমানিক নদের মোহনায় জালালপুর গ্রামসংলগ্ন নদের চরে ডলফিনটি স্থানীয় লোকজন দেখতে পান। এরপর আমরা অ্যানিমেল লাভারস অব পটুয়াখালীর সদস্যদের খবর দিই।’
অ্যানিমেল লাভারস অব পটুয়াখালীর কলাপাড়া টিমের সদস্য আলম নজির বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে ডলফিনটি ভেসে আসার পর স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথম এটিকে দেখতে পান। পরে আমাদের খবর দিলে আমরা কয়েকজন ঘটনাস্থলে যাই এবং দেখি, ডলফিনটি জীবিত আছে। তবে এর চোখেমুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ছোট ছোট আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা ডলফিনটিকে উদ্ধার করে সুস্থ করার চেষ্টা করছি।’
বন বিভাগের কলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জীবিত একটি ডলফিন আন্ধারমানিক নদের জালালপুর এলাকায় এসেছে, এ খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়েছি। বর্তমানে ডলফিনটিকে সুস্থ করার চেষ্টা চলছে। পুরোপুরি সুস্থ হলে এটিকে নদে ছেড়ে দেওয়া হবে।’
এর আগে ১৩ জুন কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের একটি ডোবায় পাওয়া যায় একটি জীবিত ডলফিন। স্থানীয় লোকজন তখন জানান, ডলফিনটি জোয়ারের পানিতে ভেসে এসেছে। ডলফিনটি উদ্ধার করার পর সুস্থ করে ওই দিন বিকেল পাঁচটার দিকে পুনরায় বঙ্গোপসাগরের মোহনায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এটির দৈর্ঘ্য ছিল ৬ ফুট ও প্রস্থ ছিল দেড় ফুট। এর গায়ের রং ছিল কালো। এটি বটলনোজ প্রজাতির ডলফিন ছিল।
সমুদ্রের নীল অর্থনীতি, উপকূলের পরিবেশ-প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফিশের ইকোফিশ-২ অ্যাকটিভিটির পটুয়াখালী জেলার সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, সমুদ্রের পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় সামুদ্রিক প্রাণীগুলো দিন দিন মারা যাচ্ছে। আজ জীবিত ভেসে আসা ডলফিনটি স্টেনেলা অ্যাটেনুয়াটা প্রজাতির। একে প্যানট্রপিক্যাল স্পটেড ডলফিনও বলে। এটি বিশ্বের সব নাতিশীতোষ্ণ ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় মহাসাগরের একটি।