কুষ্টিয়া পৌরসভার জুগিয়া এলাকায় বালুঘাটের দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় যুবদলের কোনো নেতার সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন কুষ্টিয়া শহর যুবদলের সদস্যসচিব জিল্লুর রহমান (জনি)। আজ বৃহস্পতিবার শহরে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘১৭ অক্টোবর কয়েকটি পত্রিকায় “কুষ্টিয়ায় বালুঘাটের দখল নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে গুলি বিনিময়” শীর্ষক প্রকাশিত সংবাদের একাংশে আমার সঙ্গে সমঝোতা করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে প্রচার করা হয়েছে, যা একেবারেই অসত্য। ওই সংঘর্ষের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে। ওই ভিডিওতে আমি তো দূরের কথা, আমার কোনো কর্মীকেও দেখা যায়নি। যদি আমার সঙ্গে বালুঘাটের মালিকদের সমঝোতা হতো, তাহলে আমি বা আমার কর্মী-সমর্থকেরা ঘটনাস্থলে থাকতাম। এতেই প্রমাণিত হয়, ওই সংঘর্ষের সঙ্গে আমি বা আমার কোনো কর্মী বিন্দুমাত্র জড়িত নই।’
জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমি অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কুষ্টিয়ায় রাজনীতি করি। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবনে আমার বিরুদ্ধে কেউ একটি অভিযোগও উপস্থাপন করতে পারবে না। আমি স্বৈরাচার হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে রাজপথের নির্যাতিত সৈনিক। একাধিকবার কারাবরণ করেছি।’
জিল্লুর রহমান আরও বলেন, সম্প্রতি জেলা যুবদলের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলা কমিটি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় যুবদল। ওই কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ সংবাদে তাঁকে জড়িয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য সরবরাহ করে ওই সংবাদটি প্রকাশ করিয়েছে। কোনোভাবে তাঁকে দাবিয়ে রাখতে না পেরে তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে বালুঘাটের দখলের ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকায় ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলামকে বহিষ্কার ও ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানকে সব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে জেলা বিএনপি। সেই সঙ্গে ওয়ার্ড বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আজ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গড়াই নদের তীর ঘেঁষে জুগিয়া বালুঘাটের অবস্থান। গড়াই নদের বালু জুগিয়া এলাকায় স্তূপ করে রাখা হয়। সেই বালু দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা নেন পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মহিদুল ইসলাম। গত ৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালালে বালুঘাটটি বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ দুই মাস বন্ধ থাকার পর গত সপ্তাহে আওয়ামী লীগের নেতা মহিদুল ইসলাম ওয়ার্ড বিএনপির কিছু নেতা-কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে বালু অপসারণের কাজ করতে যান। এ সময় এলাকাবাসী ও বিএনপির অন্য আরেক পক্ষ বাধা দেয়। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা চলার পর গতকাল বুধবার দুই পক্ষের মধ্যে কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে দুই পক্ষই অস্ত্র ব্যবহার করে। ওই সংঘর্ষের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ও গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়।