সিলেটে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের মিছিলে গুলিবর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মোমেনের আদালতে অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলাটি করা হয়।
মামলাটির বাদী সিলেট নগরের খারপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. সাজন আহমদ সাজু (২৫)। তিনি প্রথম আলোকে জানান, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানাকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন।
মামলায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হোসেন খানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাবেক তিন সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, হাবিবুর রহমান ও রণজিৎ সরকার; সিলেট সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ ও জাহাঙ্গীর আলম এবং সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর বাইরে অজ্ঞাতনামা ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। নাম উল্লেখ করা আসামিদের মধ্যে পুলিশ কমিশনারসহ পুলিশের নয়জন কর্মকর্তা ও সদস্য আছেন। তাঁদের মধ্যে মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিবি) তাহিয়াত আহমদ চৌধুরী, উপকমিশনার মো. আজবাহার আলী শেখ, ক্রাইসিস রেসপন্স টিম (সিআরটি) প্রধান শাহরিয়ার আল মামুন, অতিরিক্ত উপকমিশনার বা এডিসি (উত্তর) সাদেক কাওসার দস্তগীর প্রমুখ রয়েছেন।
আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন থেকে আসামির তালিকায় রয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সাহা, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ শোভন, সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস, এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি দিলোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আহমদ আল কবীর প্রমুখ।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান বানচাল করার জন্য সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বিরাম গুলিবর্ষণ করা হয়। নগরের সোবহানীঘাট এলাকায় ৪ আগস্ট বেলা একটা থেকে দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আসামিদের অনেকে বন্দুক, ককটেল ও বোমা দিয়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেপরোয়া হামলা চালান। এতে মামলার বাদী মো. সাজন আহমদ মুখে ও চোখে গুলিবিদ্ধ হন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি এজাহারে জানিয়েছেন, তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় স্প্লিন্টার ও ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া আসামিদের গুলিতে ও বোমা-ককটেল বিস্ফোরণে আরও অনেক ছাত্র-জনতা এবং পথচারী সিলেট শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।