নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে দুই বছর। কিন্তু পঞ্চগড় পৌর সুপার মার্কেটটি এখনো পড়ে আছে
নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে দুই বছর। কিন্তু পঞ্চগড় পৌর সুপার মার্কেটটি এখনো পড়ে আছে

পঞ্চগড় পৌরসভায় পড়ে আছে ১২ কোটি টাকার সুপার মার্কেট

দোকানঘর বরাদ্দ দিতে একাধিকবার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

ঠায় দাঁড়িয়ে আছে দৃষ্টিনন্দন চকচকে ভবন। বন্ধ রয়েছে মূল ফটক। বাইরে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা। ভেতরে তৈরি করা হয়েছে ছোট-বড় নানা আকৃতির দোকানঘর। তবে এসব দোকান ঘরের ব্যবহার না হওয়ায় কোনোটির শাটার নামানো আবার কোনোটির রয়েছে খোলা। এমনি চিত্র দুই বছরের বেশি সময় আগে নির্মিত পঞ্চগড় পৌর সুপার মার্কেটের।

প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলা শহরের ধাক্কামারা এলাকায় পঞ্চগড় পৌরসভা ভবনের সামনে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের পাশে নির্মাণ করা হয়েছে এই মার্কেট। কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর মার্কেট নির্মাণের সঠিক স্থান নির্বাচন না করার কারণে এসব দোকান ভাড়া নিতে নিতে ব্যবসায়ীরা কম আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি দোকানঘর বরাদ্দ দিতে একাধিকবার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে মহাসড়কের পাশে আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং, নামাজঘরসহ নানা সুযোগ–সুবিধা সম্পন্ন এই মার্কেটে দ্রুত এসব দোকানঘর বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা পৌর কর্তৃপক্ষের।

পঞ্চগড় পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের জুলাই মাসে ‘তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতীকরণ (সেক্টর) প্রকল্পের (ইউজিআইআইপি-৩)’ আওতায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ তলা ভিত্তি–সংবলিত একতলা মার্কেটটি নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ২০২২ সালের ২৫ জুলাই নির্মাণ শেষ হয়। এর পর মার্কেটটি হস্তান্তর হলেও চালু করা সম্ভব হয়নি দুই বছরেও।

পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, মার্কেট নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর ইতোমধ্যে দুইবার দোকান ভাড়া বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি। মার্কেটটিতে একটি নামাজঘরসহ বিভিন্ন আকৃতির ৪৬টি দোকানঘর আছে। এর একেকটি দোকান ঘর ভাড়া নিতে ৬ বছরের জন্য ১ লাখ টাকা এবং তিন বছরের জন্য ৫০ হাজার টাকা জামানত দিতে হয়। এসব দোকানের প্রতি মাসের ভাড়া আকৃতি ভেদে এক হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া একটি বড় আকৃতির দোকান আছে, যার ভাড়া অন্যগুলোর তুলনায় কিছুটা বেশি।

গত বুধবার বিকেলে নবনির্মিত পঞ্চগড় পৌর সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিংসহ একতলা ভবনের মাকের্টটি জনশূন্য হয়ে পড়ে আছে।

পঞ্চগড় পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুর রহমান বলেন, পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণের পর এখন পর্যন্ত দুইবার দোকানঘর ভাড়া বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ব্যবসায়ীদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এখন নতুন কমিটি করা হয়েছে। খুব দ্রুত এই কমিটির সভা করে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে আবারও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।

পঞ্চগড় শিল্প ও বণিক সমিতির সহসভাপতি মেহেদী হাসান খান বলেন, শহরের মূল যে কেন্দ্র সেখান থেকে এই মার্কেটটি কিছুটা দূরে। এ ছাড়া করতোয়া সেতু পার হয়ে যাওয়া এবং পাশে স্কুলসহ বিভিন্ন সমস্যা এখানে আছে। মূলত এসব কারণেই হয়তো ব্যবসায়ীরা সেখানে দোকান বরাদ্দ নিতে আগ্রহ কম দেখাচ্ছেন।