সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দাবিতে ২০ মিনিট ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ৪টা ৩ মিনিট থেকে ৪টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত ২০ মিনিট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় সড়কের দুই পাশে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। আগামীকাল বুধবার বেলা তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
এর আগে আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংশপ্তক ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক–সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অবরোধ চলাকালে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের ৪৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও এসে দেখছি, সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা বিদ্যমান। এ বৈষম্যের জন্য কি আমরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম? আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা কি এই বৈষম্যের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন? আমরা আবারও যুদ্ধে নেমেছি এই বৈষম্য দূর করার জন্য। ৪ জুলাই যদি সরকার আমাদের দাবি মেনে না নেয়, তাহলে সারা দেশ অচল করে দেওয়া হবে।’
দেশে প্রতিদিন শিক্ষিত বেকার বাড়ছে মন্তব্য করে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘যে পরিমাণে উচ্চশিক্ষিত বেকার বের হচ্ছে, সেই পরিমাণে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে না। সরকারের কোনো চিন্তা নেই কীভাবে এই বেকারত্বের সংখ্যা কমানো যায়, উল্টো এই বৈষম্যমূলক কোটা প্রথার মাধ্যমে বেকারত্বের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করার পাঁয়তারা চলছে।’
আগামীকাল বুধবার বেলা তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম। সমাবেশে তিনি বলেন, ‘৪ জুলাই কোটা নিয়ে আপিল বিভাগের শুনানি আছে। তাই এই আন্দোলন বেগবান করতে বুধবার বিকেলে দুই ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা পেনশন স্কিম নিয়ে আন্দোলন করছেন। তাঁদের আন্দোলনে আমাদের মৌন সমর্থন আছে। কিন্তু তাই বলে যদি তারা লাইব্রেরি বন্ধ করে, হল বন্ধ করার পাঁয়তারা করে, তাহলে প্রশাসনকে ছাড় দেওয়া হবে না।’