মুচলেকা দিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায় থেকে রেহাই পেলেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জয়নব বিবি। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলামের দপ্তরে হাজির হয়ে মুচলেকা দেন তিনি।
এদিকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড ও চট্টগ্রাম নগরের আংশিক) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এস এম আল মামুন বলেন, সরকারি গাড়ি কিংবা কর্মীকে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে গেলে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়, তা সবাই জানেন। কেউ যদি ইচ্ছা করে নৌকার ব্যানার-পোস্টার হাতে নিয়ে আচরণবিধি ভঙ্গ করেন, তার দায় আওয়ামী লীগ কিংবা নৌকা প্রতীকের নয়।
এক মাস আগে জয়নব বিবি ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান। লিখিত মুচলেকায় তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচন পরিচালনায় সরকারি গাড়ি ব্যবহারের বিষয়টি আচরণবিধিবিরুদ্ধ, তা তাঁর জানা ছিল না। এ ধরনের কাজ করায় তিনি অনুতপ্ত। তিনি ভবিষ্যতে আর এ ধরনের কাজ করবেন না।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড-চট্টগ্রাম নগরের আংশিক) আসনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেছিলেন সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জয়নব বিবি। গত রোববার এ নিয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ আমলে নিয়ে ওই দিন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা। ইউএনও কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, লিখিত মুচলেকা নিয়ে এবারের জন্য তাঁকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নেওয়ার আগে এস এম আল মামুন সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। জয়নব বিবি ছিলেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। দলীয় প্রার্থী হওয়ার জন্য এস এম আল মামুন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জয়নব বিবিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এস এম আল মামুন বলেন, প্রচারণার প্রথম দিন থেকে দলের নেতা-কর্মীদের কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন কোনোভাবেই আচরণবিধি ভঙ্গ না করে। সেভাবেই কাজ চলছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা ও আচরণবিধি ভঙ্গের খবর শোনা গেলেও সীতাকুণ্ডে তাঁরা সহনশীলভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জয়নব বিবির আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনাটি পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানার পর তিনি তাঁর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেছেন।
দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা তাঁকে জানিয়েছেন, জয়নব বিবি কারও সঙ্গে যোগাযোগ না করে এ প্রচারণা করেছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গোলাম রাব্বানী, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট ভবতোষ নাথ, মুরাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল সামাদ প্রমুখ।