চলনবিলে এখন মাইলের পর মাইল পাকা-আধা পাকা ধানের খেত। সকাল হতেই শুরু হয় খরতাপ। রোদ থেকে বাঁচার জন্য নেই ছাউনি কিংবা গাছপালা। তাই বলে ঘরে বসে নেই কৃষক। ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কায় দাবদাহে জর্জরিত হয়েও ধান কাটছেন তাঁরা। এমন প্রতিকূল পরিবেশে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি। তিন দিন ধরে মাঠে গিয়ে তারা কৃষকের হাতে তুলে দিচ্ছেন পানির বোতল, খাবার স্যালাইন, শরবত ও বিস্কুট। নিজেদের চাঁদায় চলছে এই উদ্যোগ।
কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা মূলত চলনবিলের পরিবেশ নিয়ে কাজ করেন। পাখি শিকার বন্ধ ও উন্মুক্ত জলাশয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে তাঁদের সাফল্য আছে। এবার তাঁরা অনাবৃষ্টিতে চলনবিলের কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ৫০০ বোতল বিশুদ্ধ পানি ও ৫০০ প্যাকেট স্যালাইন কিনে নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মাঠে নেমে পড়েন তাঁরা। খবর পেয়ে নাটোরের সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি কর্মকর্তারাও তাঁদের পাশে ছুটে যান। একসঙ্গে পানি ও স্যালাইন বিতরণ করেন। ফিরে এসে আরও ৩০০ জনের জন্য পানি, স্যালাইন, শরবত ও বিস্কুটের জোগাড় করেন তাঁরা। আজ শনিবার ফের ধান কাটা শ্রমিকদের পানীয় খাবার সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা।
এই কর্মসূচিতে যুক্ত আছেন চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি আখতারুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সদস্য শারফুল ইসলাম, আবদুর রশীদ, আবু বকর সিদ্দিক, হাসিবুল হাসান, কোরবান আলী প্রমুখ।
সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শ্রমিকেরা সিংড়ায় ধান কাটতে এসেছেন। তাঁদের পক্ষে বিশুদ্ধ খাদ্য পানীয়ের ব্যবস্থা করা কঠিন। সে জন্য কমিটির সদস্যরা তাঁদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করছে। স্থানীয় প্রশাসন পাশে থেকে বিষয়টি উৎসাহিত করছে।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হা-মীম তাবাসসুম প্রভা বলেন, ‘চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির তরুণ স্বেচ্ছাসেবীরা সারা বছর বিলের পরিবেশ নিয়ে কাজ করেন। এবার তাঁরা ধান কাটা শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব তাদের সহযোগিতা করব।’