মেহেরপুরে চিকিৎসাজনিত ছুটি নিয়ে এক সরকারি কর্মকর্তা নৌকার প্রার্থীর প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। ওই ব্যক্তির নাম সাইদুর রহমান। তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাঠ সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত। তাঁর অফিস সূত্রে জানা গেছে, তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দুই দফা ছুটিতে আছেন।
সাইদুর রহমান মেহেরপুর-১ (সদর-মুজিবনগর) আসনের নৌকার প্রার্থী জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। মেহেরপুর সদর উপজেলার শোলমারি গ্রামের বাসিন্দা হারেজ শেখ বলেন, সাইদুর রহমান কুতুবপুর ইউনিয়নের শোলমারি গ্রামে নৌকার কর্মী হিসেবে বেশ পরিচিত। তিনি নিয়মিত নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।
অথচ সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ অংশে বলা আছে, সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবেন না অথবা বাংলাদেশ বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকারের সহায়তা করতে পারবেন না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধি সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। এ কারণে একটি নির্বাচনী সভায় সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেছি। চিকিৎসার কারণে আমি ছুটিতে রয়েছি।’
সম্প্রতি নৌকার একটি প্রচারণা সভা সাইদুর সঞ্চালনা করেন। সেখানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, চাকরি সূত্রে তিনি দেশের সব জেলা ঘুরেছেন। অনেক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে তাঁর পরিচয়ের সুযোগ হয়েছে। তবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের মতো একটি মানুষও তিনি আর খুঁজে পাননি। তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সাইদুর রহমান তাঁর ব্যাংকের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখায় কর্মরত।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার ব্যবস্থাপক আমেনা খাতুন বলেন, ‘সাইদুর রহমান তো অসুস্থ। তিনি মেডিকেল লিভে ছিলেন ১৫ দিনের জন্য। পুরোপুরি সুস্থ হতে না পারায় দ্বিতীয় দফায় ২১ দিনের মেডিকেল লিভে আছেন। দ্বিতীয় দফার ছুটি মাত্র তিন দিন অতিবাহিত হয়েছে। বিষয়টি যদি সত্য হয়, তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা নেব। এ ছাড়া চাকরিবিধি ও চাকরি শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণ পেলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’